কোথাও বেড়াতে গেলে তো একটু আধটু অনিয়ম হয়ই। তবে বেড়াতে গিয়ে কে আর নিয়মের মধ্যে আটকে থাকতে চায়। তাই সারা দিন টো টো কোম্পানি, চুটিয়ে এটা সেটা খাওয়া, ঘুমের বালাই নেই-তার মধ্যে আবার যদি আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়া হয় ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়ার কথা, আপনি থোড়াই কেয়ার।
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন। পুজোর পরপরই বেড়াতে গেলেন আর সারা গায়ে ট্যান আর রুক্ষ চুল নিয়ে ফিরলেন। এদিকে দুদিন পরেই আপনার দিওয়ালি পার্টি। ওই রোদে পোড়া ত্বকে কি দীপাবলির সাজ খোলতাই হবে? এতো অল্প সময়ের মধ্যে ত্বক আর চুলে ড্যামেজ কন্ট্রোল করাটা কিন্তু মুশকিল।
তাই আগে থেকেই সাবধান হোন। বেড়ানোর সময়েও একটু আধটু নিজের যত্ন নিন। এখন যদি প্রশ্ন করেন, ট্রাভেল করার সময় কি এতোশত সাজগোজের জিনিষপত্র নেওয়া সম্ভব? না অবশ্যই না। সেই জন্যই আমরা আছি। দেখুন কেমন পরিপাটি করে গুছিয়ে দিচ্ছি আপনার ট্র্যাভেল বিউটি কিট।
যেখানেই বেড়াতে যান, সমুদ্র, পাহাড়, জঙ্গল- সানস্ক্রিন ক্যারি করতে ভুলবেন না। আর সমুদ্রের ধারে বেড়াতে গেলে তো নয়ই। সান প্রোটেকশন না থাকলে, ট্যানিং থেকে আপনাকে বাঁচায় কার সাধ্য। বাইরে বেরনোর আগে, মুখে, হাতে, পায়ে ভালো করে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। তিন-চার ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন রি-অ্যাপ্লাই করা দরকার।
পাহাড়ে, বা একটু শীতের দেশে গেলে ময়শ্চরাইজার বা ক্রিম ক্যারি করুন। সকালে-বিকেলে-রাতে তিন বেলা ত্বকে লাগান। তাতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে। ভেসলিন, বোরোলীন সঙ্গে রাখুন। কাজে আসবেই গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।
ফেস ওয়াশ মাস্ট। তার সঙ্গে ক্যারি করুন ওয়েট ফেস ওয়াইপস। বাইরে ঘোরার সময় কাজে লাগবে। ফেস মিস্ট বা গোলাপ জলের স্প্রে ব্যাগে রাখুন। ট্রাভেল করার সময় মাঝে মাঝেই মুখে স্প্রে করুন। ত্বক তরতাজা থাকবে। জলের ঝাপটাও দিতে পারেন।
সারাদিন বেড়িয়ে হোটেলে ফিরে আগে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। এরপর ক্রিম, ময়শ্চরাইজার বা অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে যত খুশি আলসেমি করুন। ঠোঁটে অল্প একটু লিপ বাম লাগাতে ভুলবেন না।
ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্নও সমান জরুরি। সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করুন প্রায় প্রতিদিন। বেড়াতে গেলে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করা অনেক সুবিধাজনক। ক্যারি করার কথা ভাবা যায়। লিভ ইন কন্ডিশনার ক্যারি করুন।
এবার আসি মেকআপের প্রসঙ্গে। বেড়াতে গেলে মেকআপ করবেন না, এমন দিব্যি কেউ দেয়নি। তবে মেকআপ যত মিনিম্যাল হবে ততই ভালো। বিবি ক্রিম বা সিসি ক্রিম ক্যারি করুন। সানস্ক্রিন আর ফাউন্ডেশন দুটোরই কাজ করবে। কমপ্যাক্ট মাস্ট। একটা ডার্ক শেডের লিপস্টিক অবশ্যই যেন সঙ্গে থাকে- যা সমস্ত পোশাকের সঙ্গে মানানসই।
এমনিতেই সারাদিন ঘোরার সময় আপনার চোখে রোদ-চশমা থাকবে। তাই চোখের মেকআপ নিয়ে তেমন মাথা ঘামানোর দরকার নেই।শুধু একটা কাজল থাকুক। ওই দিয়েই আই লাইনারের কাজ চলে যাবে। বেস মেকআপ করে কমপ্যাক্ট বুলিয়ে নিন। ঠোঁটে লাল টুকটুকে লিপস্টিক লাগান। ব্যস আপনি রেডি। একদম নো মেকআপ লুক চাইলে হালকা কাজল আর ন্যুড শেডের লিপস্টিক কাফি।
চুল নিট করে বেঁধে নিন। পনিটেল বা বান করে নিতে পারেন। খোলা চুল তাড়াতাড়ি নোংরা হয়ে যেতে পারে। তাই ট্রাভেল করার সময় ম্যানেজেবল হেয়ারস্টাইল মাস্ট।
সমস্ত মেকআপ ও বিউটি প্রোডাক্ট একটা আলাদা ব্যাগে বা বিউটি অরগ্যানাইজারে ক্যারি করুন। চিরুনি, ববি পিন, হেয়ার ক্লাচার, সেফটিপিন, রাবার ব্যান্ড ইত্যাদি সঙ্গে থাকা মাস্ট। অ্যাকসেসরিজ আলাদা খাপে রাখুন। দু-একটা স্টেটমেন্ট নেকপিস ক্যারি করুন। চাঙ্কি ইয়ার রিঙও। যেগুলো মোটামুটি সব পোশাকের সঙ্গে মানায়। অ্যাঙ্কলেট, ওভারসাইজড রিং-ও রাখুন একটা কি দুটো। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে স্টাইলাইজ করা যাবে।
ভালো করে জল খেতে ভুলবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে। তাতে ত্বক ও চুলের ড্যামেজ কন্ট্রোল অনেকটাই আটকানো সম্ভব।
পুজোর সময় ঘর সাজানোর দুর্দান্ত কিছু হোম ডেকর আইটেমের সন্ধান থাকবে পরের পর্বে। চোখ রাখুন এখন খবরের পুজোর প্রস্তুতিতে।