গতকাল বারাসাতের কাছে বামনগাছির একটি হোটেল থেকে দুটি টোকে গেকো বা তক্ষককে উদ্ধার করেছে শুল্ক দফতরের প্রতিরোধ বিভাগের আধিকারিকেরা। এই ঘটনায় ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের কাছে আগেই নির্দিষ্ট খবর ছিলো। সেই অনুযায়ী তাঁরা ক্রেতা সেজে পাচারকারীদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রথমে একটি তক্ষকই দেখানো হয়।তার পর পাচারকারীরা যখন নিশ্চিত হন, ক্রেতার কাছে টাকা আছে এবং তাঁরা কোনও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবেন না, তখন আরও একটি তক্ষক তাঁদের দেখানো হয়। এই ভাবেই বামাল সমেত পাচারকারীদের পাকড়াও করা হয়।সূত্রের খবর অনুযায়ী এই তক্ষক দুটি নিয়ে আসা হয়েছে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা থেকে। তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন, পাচারকারীদের উদ্দেশ্য ছিলো, আরও ৮ থেকে ১০ টার মতো তক্ষক যোগাড় করার পর, সেগুলি কলকাতা বিমান বন্দর দিয়ে চীনে পাচার করার।
তক্ষক দুটির আয়তন, একটি ১৬ ইঞ্চি। অন্যটি ১৪ ইঞ্চি। উদ্ধার হওয়ার পর তাদের নিজেদের হেফাজতেই রাখা হয়েছিলো। আজ তাদের বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।মজার কথা খাওয়ার জন্য মরা আরশোলা দেওয়া হলে তারা মুখে দিয়েও দেখেনি। এর পর জ্যান্ত আরশোলা দেওয়ার পরে তারা নাকি তা মহানন্দে শিকার করে খেয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
তক্ষকের বৈজ্ঞানিক নাক নাম গেকো গিকো (Gekko Geeko)।ভারত, বাংলাদেশ, নিউ গিনি, ইন্দোনেশিয়ার ইত্যাদি দেশে এই সরীসৃপটির দেখা মেলে। দেখতে অনেকটা গিরগিটির মতো হলেও এর গায়ে কমলা রঙের ফোঁটা ফোঁটা দাগ একে সাধারণ সরীসৃপের থেকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয়। চীন দেশে ওষুধ তৈরি করতে এই বিশেষ প্রজাতির সরীসৃপের বিপুল চাহিদা। ক্যান্সার, হাঁপানি, চর্মরোগ ইত্যাদির ওষুধ তৈরি করতেই এই প্রাণীর চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। চাহিদা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। তার কারণ গুজব রটেছে এইডস রোগ সারাতেও নাকি এই বিশেষ প্রজাতির সরীসৃপটি কাজে লাগে।আবার এই সরীসৃপটি চীনে পোষ্য হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। সেই কারণেই এর দাম আকাশ ছোঁয়া।দাম নির্ধারণ করা হয় আয়তন অনুযায়ী।মোটামুটি আট থেকে কুড়ি লাখ টাকার মধ্যে। তবে এদেশে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী তক্ষক ধরা বা বিক্রি করা আইনত অপরাধ।