লোকসভা ভোটের আগে বড়সড় চমক দিল প্রদেশ কংগ্রেস। আচমকাই সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অধীর চৌধুরিকে। তাঁর জায়গায় নতুন সভাপতি হলেন সোমেন মিত্র।
জানা গেছে, দিল্লীতে রাহুল গান্ধীর সম্মতিতেই প্রদেশ কংগ্রেসে এই রদবদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এআইসিসি-র তরফে এই নিয়ে একটি প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সোমেন মিত্রের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের চার কার্যনির্বাহী সভাপতি করা হয়েছে শঙ্কর মালাকার, নেপাল মাহাত, আবু হাসেম খান চৌধুরী এবং দীপা দাশমুন্সিকে। অধীর চৌধুরিকে রাখা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান পদে। সমন্বয় কমিটির সভাপতি করা হয়েছে প্রদীপ ভট্টাচার্যকে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দলের মধ্যে অধীরের রাশ আলগা হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিক্ষুব্ধ কর্মীর সংখ্যা বাড়ছিল। অনেকে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তাই অধীরের এই অপসারণ অনেকটা প্রত্যাশিতই। তাছাড়া, লোকসভা ভোটের আগে নতুন নেতা এনে দলীয় কর্মীদের কিছুটা চাঙ্গা করতে চাইছে কংগ্রেস। পাশাপাশি অধীর বরাবরই তৃণমূলের সঙ্গে কোনও রকমের সমঝোতার বিপক্ষে। দিল্লিতে বার বার নিজের এই মনোভাবের কথা জানিয়েও দিয়েছিলেন অধীর এবং তাঁর অনুগামীরা। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে প্রদেশ কংগ্রেস শীর্ষস্তরে এই রদবদল অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি সোমেন মিত্রের বড় প্লাস পয়েন্ট তাঁর অভিজ্ঞতা। মাইনাস পয়েন্ট, তাঁর অসুস্থতা। এর আগে সোমেন মিত্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন দলকে আকাঙ্খিত জয় এনে দিয়েছিলেন। তাই বাংলায় সভাপতি পদে অধীরকে সরিয়ে সোমেনকে বসাতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে খুব একটা ভাবতে হয়নি বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, সোমেন মিত্র এর আগে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত। তিনি সভাপতি থাকাকালীনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে এসে তাঁর নতুন দল তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেন। ২০০৮ সালের জুলাই মাসে সোমেন কংগ্রেস ছেড়ে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস বলে নতুন দল গড়েন। ২০০৯ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এই বছর ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪-র জানুয়ারি মাসে তিনি আবার কংগ্রেসে ফিরে আসেন। তার আগে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফাও দেন।