মানানসই হেয়ার স্টাইল না হলে কোনও সাজই সম্পূর্ণ হয়না। তাই পুজোর সময়ও সাজগোজের সময় হেয়ার স্টাইলকে গুরুত্ব দিতে হবে বৈকি। তবে পুজোর সময় এমন হেয়ারস্টাইল দরকার, যা অল্পেই এলোমেলো হয়ে যাবেনা। অগোছালো চুলে আর যাই হোক ফ্যাশন স্টেটমেন্ট জমবেনা। তাই পুজোর হেয়ারস্টাইল করতে হবে বুদ্ধি করে। সারা রাত সারারাত ঠাকুর দেখা আর হৈ-হুল্লোড় যতই চলুক না কেন হেয়ার স্টাইল একটুও এদিক ওদিক হবেনা। এরকমই কিছু চুলের কায়দার টিপস শেয়ার করলাম। তার সঙ্গে রইলো টুকিটাকি পুজোর আগে চুলের যত্নের টিপস।
খোলা চুলের হেয়ার স্টাইল পছন্দ? এদিকে চুল আনম্যানেজেবল। তা হলে তো মুশকিল। খোলা চুল তাড়াতাড়ি এলোমেলো হওয়ার সম্ভাবনা। এইবেলা পার্লারে গিয়ে চুল স্ট্রেইট করে নিন। না হলে হেয়ার স্ট্রেটনার ব্যবহার করে চুল সোজা করে নিন। স্ট্রেইট হেয়ার ম্যানেজ করা অনেক সোজা। সহজে এলোমেলো হয়না। চুল সাইড পার্টিং করে নিন। আপনার চুল কাঁধ পর্যন্ত হোক, অথবা কোমর ছাপিয়ে আরও লম্বা- যেমনই হোক না কেন সাইড পার্টিং সব্বাইকে মানায়। সব ধরনের মুখে মানায়। আর কি চাই। দিনে রাতে সব সময়েই এই সিম্পল অথচ স্মার্ট হেয়ারস্টাইলটি করা যায়। তবে ব্যাগে অবশ্যই একটা চিরুনি রাখবেন। সময় সময় সেট করে নিতে কাজে লাগবে।
ওয়েস্টার্ন পোশাক হোক বা স্কার্ট টপ। কিংবা ফুরফুরে ক্রেপ শাড়ি অথবা এথনিক আনারকলি সব পোশাকের সঙ্গে পনিটেলের জুড়ি নেই। তবে পুজোর সময় কাহানিতে একটু টুইস্ট চাই বৈকি। তাই সাধারণ পনিটেল নয়। তাই সামনের দিকে চুল গুলিতে বিনুনি করে নিন। এই বিনুনি কিন্তু নানা কায়দায় করা যেতে পারে। সাইড বা মিডল পার্টিং করে দুদিকে বিনুনি করা যেতে পারে। আবার মাঝখান থেকে চুলের গোছা নিয়ে বিনুনি করা যেতে পারে। বিনুনি হয়ে গেলে বাকি চুলের গোছা নিট করে লো পনিটেল বেঁধে নিন। এবার ক্লিপ দিয়ে বিনুনি পনিটেলের সঙ্গে আটকে নিন। বিনুনিতে ইনটারেস্টিং হেয়ার অ্যাকসেসরি ব্যবহার করা যেতে পারে।
মুখ যদি লম্বাটে বা ডিম্বাকৃতির হয়, আর পোশাক যদি হয় পশ্চিমী তা হলে সাইড পনিটেল করা যেতে পারে। গোল মুখ যাঁদের তাঁরা এই স্টাইলটি না করলেই ভালো। গোল মুখে কোনও সাইড হেয়ারডু না করাই ভালো। এই হেয়ার স্টাইল স্ট্রেইট হেয়ারে ভালো খোলতাই হয়। পনিটেলের অংশে হাইলাইট করতে পারলে ভালো লাগবে।
পুজোর একটা দিন আপনি পুরো দস্তুর দেশি গার্ল হয়ে উঠতে চান? তবে সেই দিন ট্রাই করতে পারেন বিগ বান স্টাইল। চুল মিডল পার্টিং করে নিয়ে পিছনে লো-বান করে নিন। ফ্লোরাল কোনও হেয়ার অ্যাকসেসরি বা হেয়ারলুম রুপোর কাঁটা খোঁপায় আটকে নিন। মাঙ্গটিকা এখন ফ্যাশনে ইন। স্টাইলাইজ করা যেতে পারে। ডিজাইনার শাড়ি থেকে হ্যান্ডলুম কিংবা তাঁত-এই হেয়ার স্টাইল লা জবাব। আবার লেহেঙ্গা চোলির সঙ্গেও মানাবে ভালো।
মেসি বানের হেয়ার স্টাইল অনেক দিন ধরেই ফ্যাশনিস্তাদের পছন্দ। পুজোর সময় এই হেয়ার স্টাইল করা যেতেই পারে। প্রায় সমস্ত পোশাকেই এই হেয়ার স্টাইল মানাবে। বলিউডের অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের মতো চুলের সামনের অংশ একটু ফুলিয়ে নিয়ে বাকি অংশ দিয়ে আলগা হাতে খোঁপা বেঁধে নিতে পারেন। সাইড বান বা সাইড মেসি বান করা যেতে পারে।
ট্রাই করতে পারেন নানা ধরনের টপ নট হেয়ার স্টাইলও। টপ নট একটা নিট ও শার্প লুক তৈরি করে। তাই বলে তাঁত বা হ্যান্ডলুমের শাড়ির সঙ্গে এই হেয়ার স্টাইল মোটেই মানাবেনা। ডিজাইনার ক্রেপ, বা ইন্দো-ওয়েস্টার্ন অথবা ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সঙ্গে মানাবে ভালো।
এবার একটা জরুরি কথা মাথায় রাখুন। পুজোর সময় যে হেয়ার স্টাইলই করবেন না কেন তা যেন আপনার পোশাক ও অ্যাকসেসরির সঙ্গে মানানসই হয়। তাই আগে থেকে প্ল্যান করে নিন কোন দিন কোন পোশাক পরবেন? কেমন ভাবে স্টাইলাইজ করবেন ইত্যাদি। সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে হেয়ার স্টাইল নিয়ে ভাবনা চিন্তা করুন।
হেয়ার স্টাইল কিন্তু মুহূর্তে আপনার মুখের ভোল বদলে দিতে পারে। সেটা ভালো বা খারাপ দুটোই হতে পারে। আপনি ভালোটাই চান নিশ্চয়। সব হেয়ার স্টাইল সব মুখে মানায় না। আপনার মুখে কোনটা মানায়-সেটা জানার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আগে থেকেই বিভিন্ন হেয়ার স্টাইল ট্রাই করে দেখে নেওয়া। তাহলেই কোন হেয়ার স্টাইলে আপনার স্টাইল কোশেন্টের পারদ চড়চড় করে উঠবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকবেনা।
এখনও পুজোর কিছু দিন বাকি আছে। এইবেলা চুলের যত্ন নিন। চুল যদি রুক্ষ হয় তাহলে তার জন্য ব্যবস্থা নিন। হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। দই আর কলার হেয়ার প্যাক চুলকে নরম ও ম্যানেজেবল রাখে। নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখুন। হেয়ার স্পা করতে পারেন। চুলের স্বাস্থ্য যদি ভালো হয় তাতে যেকোনও হেয়ার স্টাইলই ভালো হবে।
এখন খবরের পুজোর প্রস্তুতিতে চোখ থাকছে তো? পরের পর্বে থাকছে পুজোয় পুরুষদের ফ্যাশন নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন।