পঞ্চায়েতের দখল নিতে রামের সঙ্গে হাত মেলানো থেকে তৃণমূলকে হারিয়ে বিজেপিকে ঠেকানো – একের পর এক অবাস্তব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। যেগুলি মানুষের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যায় না। আর এসব কারণেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তারা। তাই লোকসভা ভোটে নিজেদের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করতে রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণে সিপিএম-কে আরও বাস্তববাদী হওয়ার পরামর্শ দিতে চলেছে অন্য বাম দলগুলি। রাজনৈতিক মহলের মতে, শরিকদের এহেন পরামর্শে বেকায়দায় পড়তে পারেন প্রকাশ কারাত, বৃন্দা কারাতদের মতো কট্টরপন্থী নেতারাই।
জানা গেছে, লোকসভা ভোটে রণনীতি স্থির করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর দিল্লীতে দলের একদিনের গুরুত্বপূর্ণ পলিটব্যুরো বৈঠকে বসছে সিপিএম। চলতি সপ্তাহেই সিপিএমের সঙ্গে সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি-র মতো দলগুলি বৈঠকে বসতে পারে। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চাইছেন সিপিএমের সাধারন সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। আর এই সব ইস্যুতেই সিপিএম-কে বাস্তববাদী নীতি গ্রহণ করার নির্দেশ দিতে চলেছেন শরিক দলের নেতারা।
কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, তৃণমূলকে হারিয়ে বিজেপিকে ঠেকানোর সিপিএমের এই নীতি শুধু অবাস্তব নয়, পাগলের প্রলাপ। সিপিএম নেতা-কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, কর্ণাটক নির্বাচনের সময় বিজেপি-কে ঠেকাতে কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছিল সিপিএম। তাহলে বাংলায় বিজেপি-কে ঠেকাতে সিপিএম কেন তৃণমূলকে সমর্থন করছে না? তাঁদের মতে, সিপিএম বিজেপি-র কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছে। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে আমডাঙা যার জলজ্যান্ত প্রমাণ। একইসঙ্গে কংগ্রেসের হাত শক্ত করার কথাও ভাবছে সিপিএম নেতৃত্ব। কেরালা এবং তামিলনাড়ুতে যেভাবে কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছে সেই মডেলই সারা দেশে আনা যায় কি-না, তা নিয়েও আলোচনা হবে।
বাস্তববাদী পথে হেঁটে রনকৌশল গ্রহণের এই পরামর্শ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সিপিআই-এর রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ডি রাজার মতে, ‘আমাদের সামনে লক্ষ্য এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। তা হল আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারকে হারাতে হবে। তার জন্য আমাদের বাস্তববাদী নীতিই গ্রহণ করতে হবে’।