পুজোর আগে খুশির হাওয়া বানতলা চর্মনগরীতে। সৌজন্যে রাজ্য সরকার। বানতলায় প্রতিদিন ২০ লক্ষ লিটার জল শোধনের ক্ষমতাযুক্ত চারটি কমন এ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিএটিপি) তৈরি করছে কেএমডিএ। এর জন্য রাজ্য সরকার ১০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এটা হলেই নতুন আরও ২০০ কারখানা চালু করা সম্ভব হবে বানতলায়। ফলে কম পক্ষে দেড় লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। চর্মনগরীর মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ খান বলেন, ‘আমাদের এখানে ২০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে। তার উপর নির্ভর করে প্রায় চারশো কারখানা চলছে। সরকার নতুন করে ১০৯ কোটি টাকা খরচ করে আরও চারটি আধুনিক মানের সিএটিপি তৈরির কাজ শুরু করায় ২০০টি নতুন কারখানা খোলা সম্ভব হবে।’
বানতলায় এখন পর্যন্ত ৪৬০টি কারখানা চালু আছে। সেই সমস্ত কারখানার চামড়া শোধনের জন্য চর্মনগরীর ভিতর চারটি বড় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে। প্রতিটি দৈনিক ৫ লক্ষ লিটার করে মোট ২০ লক্ষ লিটার জল শোধন করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন নতুন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি না হওয়ায় সেখানে মেগা লেদার ক্লাস্টার চালু করা সম্ভব হচ্ছিল না। অথচ ফুটওয়ার পার্ক, মডিউল ৫, ৬, ৭, ৮ তৈরি করার জন্য নতুন আরও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করা খুব জরুরি। তার জন্য বানতলা চর্মনগরী ট্যানারি সংগঠনের পক্ষে ডিআইপিপি (ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রমোশন-এর কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে কেএমডিএ-র মাধ্যমে প্ল্যান্ট তৈরির প্রকল্প শুরু করেছে। এজন্য ১৮ মাসের সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে মেদিনীপুরের এক ঠিকাদার সংস্থাকে।
ট্যানারি সংগঠনের অন্যতম সদস্য, একটি নামী চামড়া কারখানার মালিক জিয়া নফিজ বলেন, ‘পরিবেশ দূষণের ভূত বারে বারে বানতলাকে তাড়া করে। তাছাড়া শিল্পের বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর অভাব ছিল এখানে। সেটা সরকারের গোচরে আনতেই রাজ্য সরকার বানতলা চর্মনগরীকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য।
সূত্রের খবর, ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মাত্র ৮ থেকে ১০ একর জায়গার উপরে আধুনিক মানের এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট গড়ে উঠছে। এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ সম্পন্ন হলেই নতুন প্রকল্পের জন্য ছাড়পত্র পাওয়া যাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে। কেএমডি-এর এক কর্তা বলেন, ‘মাত্র দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। তাই দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু করা হয়েছে। এটা শেষ হলেই বানতলাতে আরও নতুন কিছু কারখানা তৈরি করা সম্ভব হবে।’