বাড়িতে বৃদ্ধা মা। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। প্রায় অথর্ব অবস্থা। ভালো করে হাঁটতেও পারেন না। এমন একজনকে সঙ্গে নিলে বেড়ানোর মজাই মাটি। তাই ছেলে-বৌমা অসুস্থ মা’কে বাড়িতে তালাবন্দী করে রেখে নিজেরা বেড়াতে চলে গিয়েছেন আসামে। এদিকে অসহায় বৃদ্ধা না পারছেন রান্না করতে, না পারছেন বাড়ির বাইরে বেরোতে। পেটের খিদে মেটাতে শুকনো মুড়ি চিবিয়ে খেয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর থাকতে পারেননি। চিৎকার করে কেঁদেছেন।
অসহায় বৃদ্ধার কান্না শুনে এগিয়ে আসেন বাড়ির মালিক এবং এলাকার লোকজন। তারাই এখন দেখভাল করছেন বৃদ্ধা রায়মণি ভট্টাচার্যের। এমন মর্মান্তিক ঘটনা শোরগোল ফেলেছে এলাকায়। খবর পৌঁছেছে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ তিনি। সঙ্গে সঙ্গে দলের ২ যুবনেতাকে পাঠিয়েছেন বৃদ্ধার পাশে দাঁড়াতে। তাঁদের হাতে বৃদ্ধার জন্য ফল, শাড়ি, মিষ্টি পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধা রায়মণি। আশীর্বাদ করেন অভিষেককে। দুই যুবনেতা জানান, যে কোনও সাহায্যে তাঁর পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সাংসদ অভিষেক। বলেছেন, ‘বাংলায় মায়েদের গুরুত্ব সবথেকে বেশী। সেই মায়ের যে কোনও দুঃখ কষ্টে দলের যুব কর্মীরা সবসময় পাশে থাকবে’।
জানা গেছে, ওই দম্পতির নাম রতন ভট্টাচার্য ও স্বাতী ভট্টাচার্য। বাড়ি ব্যারাকপুরের কালিয়ানিবাসে। ব্যারাকপুরেরই একটি বাচ্চাদের স্কুলে পড়ান তাঁরা। শিক্ষক দম্পতি বিধবা শাশুড়িকে রাস্তায় বসিয়ে বেড়াতে চলে গিয়েছেন বলে অভিযোগ৷ বৃদ্ধা মা রায়মনিদেবীর খাবার হিসাবে রেখে গিয়েছেন শুকনো মুড়ি৷ তাও পরিমাণে যৎসামান্য৷ রায়মনি ভট্টাচার্যের তিন ছেলে৷ ছোট ছেলে রতন বেশি আদরের৷ তাই তাঁকেই সর্বস্ব দিয়ে দেন মা৷ সেই রাগে দুই ছেলে ফিরেও তাকায় না বৃদ্ধা মায়ের দিকে৷ রায়মনি ভট্টাচার্যের কথা সংবাদমাধ্যম মারফতই কানে পৌঁছয় সাংসদ অভিষেকের৷ তাঁর নির্দেশে রাতেই দুই যুবনেতা ছুটে আসেন বৃদ্ধার কাছে। তাঁকে স্বান্তনা জানান। হাতে তুলে দেন মিষ্টি, ফল, খাবার। সঙ্গে জানান, অভিষেকের নির্দেশ, তাঁর যে কোনও সমস্যায় তাঁরা রায়মণির পাশে আছেন।