বিজেপি-র বিরুদ্ধে বারবার প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে। মোদী-শাহ জুটি যতই এই অভিযোগ খণ্ডানোর চেষ্টা করুক তাদের কাজকর্মে এমন ইঙ্গিতই মিলছে বারবার।
কয়েকদিন আগেই এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তেলেগু অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলেগু দেশম পার্টির সর্বোচ্চ নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু। গোটা দেশজুড়ে মোদি-বিরোধী প্রচার মঞ্চেও তুলেছিলেন ঝড়৷ এবার চন্দ্রবাবু নাইডুর বিরুদ্ধে জারি হল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। অভিযোগ, এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার বদলা নিতেই চন্দ্রবাবু নাইডুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বিজেপি।
অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারি হতেই তীব্র সমালোচনা করেন তেলুগু দেশম পার্টির মুখপাত্র লঙ্কা দিনাকর। তাঁর অভিযোগ,‘মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার নেপথ্যে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের চক্রান্ত রয়েছে৷ এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক৷’
২০১০ সালে একটি মামলায় নাইডুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই পরোয়ানা কার্যকর করার আদেশ জারি করেছে মহারাষ্ট্রের নানদের জেলার ধরমাবাদের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। চন্দ্রবাবু-সহ মোট ১৬ জন দেশম নেতাকে ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অন্ধ্রের জলসম্পদ মন্ত্রী দেভিনেনি উমামহেশ্বর রাও, সামাজকল্যাণ মন্ত্রী আনন্দ বাবুর বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আদালতের প্রশ্ন, কেন এতদিন ধরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা হয়নি? প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাবলি প্রকল্প এলাকায় গিয়েছিলেন চন্দ্রবাবু ও তাঁর দলের সদস্যরা৷ গোদাবরী নদীর ওপর বাবলি বাঁধ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বাঁধ তৈরি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অন্ধ্রপ্রদেশ। ওই সময় সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিসের ওপর হামলা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন চন্দ্রবাবুরা। কিন্তু, তাঁরা জামিনের আবেদন জানাননি। এক মাস বন্দি থাকার পর মুক্তি পেয়েছিলেন।
চন্দ্রবাবুর ছেলে এন লোকেশ বলেন, ‘চন্দ্রবাবু-সহ দলের অন্য নেতারা আদালতে যাবেন। গ্রেপ্তার হলে হবেন। চন্দ্রবাবু রাজ্যের স্বার্থে লড়াই করেছিলেন। মনে রাখতে হবে, সেই সময় ওঁরা গ্রেপ্তার হলেও জামিন নিতে চাননি। এবারও নেবেন না।’ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনাকে রাজ্যে প্রচারের ইস্যু করতে চাইছে তেলেগু দেশম পার্টি৷ কারণ, চন্দ্রবাবুকে গ্রেপ্তার করা হলে অন্ধ্রে তার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হবে। মনে করা হচ্ছে, উচ্চতর আদালতে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও সেই পথে যাবেন না চন্দ্রবাবু।