ডিসেম্বরে ভুবনেশ্বরে হকি বিশ্বকাপ। তার আগে আন্তর্জাতিক হকি থেকে অবসর নিলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সর্দার সিং। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হল, প্রিমিয়ার ইউরোপিয়ান ক্লাব টিমে কোচিং করা।
চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্দার সিংয়ের সিনিয়র জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল। ২০০৬ সাল ছিল সেটা। তারপর থেকে ভারতীয় দলের মাঝ মাঠের ইঞ্জিন হয়ে ওঠেন তিনি। ভারতের হয়ে ৩৫০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ২০০৮ সালে সুলতান আজলান শাহ কাপে ক্যাপ্টেনসি গুরুদায়িত্ব পান সর্দার। ২০০৮ থেকে ২০১৬, দীর্ঘ আট বছর ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন সর্দার সিং। সবচেয়ে কম বয়সে ক্যাপ্টেন হওয়ার নজির রয়েছে সর্দারের। ২০১২ সালে অর্জুন পুরস্কার ও ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি। অলিম্পিকের আসরে দেশের হয়ে দু’বার প্রতিনিধিত্ব করেন।
ডাচ ও জার্মান লিগে খেলা সর্দার এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হকি ইন্ডিয়া, হরিয়ানা সরকারের থেকে অনুমতি নেওয়ার পর আমি কোচিং শুরু করব। প্রিমিয়ার ইউরোপিয়ান লিগে খেলা ক্লাবে কোচিং করানোর ইচ্ছা রয়েছে। আমি প্রথমে চিন্তা করেছিলাম ২০২০ টোকিও ওলিম্পিকস পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারব। আমার যা ফিটনেস রয়েছে, তাতে এই লক্ষ্যে সফল হতে পারতাম। কিন্তু এশিয়াডের সেমি-ফাইনালে হারের পর দলের কোচ, সিনিয়র প্লেয়ার ও পরিবারের সদস্যদের আলোচনা করে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত। তবে সব প্লেয়ারের জীবনে এই সময় আসে।’
এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ জেতার পর ভারতীয় হকি দলে আবার বিদেশি কোচ নিয়োগের আওয়াজ উঠেছে। এই প্রসঙ্গে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার বলেন, ‘বিদেশি কোচ এলে প্লেয়ারদের কমিউনিকেশন সমস্যা হবে। কারণ সব প্লেয়ার ইংরেজি ভাষায় দক্ষ নয়। প্রতি কোয়ার্টারের পরে দু’মিনিটের ব্রেক থাকে। ওই সময়ের মধ্যে কোচকে দ্রুত ম্যাচ বিশ্লেষণ করতে হয় প্লেয়ারদের সামনে। বিদেশি কোচ হলে তা দ্রুত বুঝতে অসুবিধা হয় প্লেয়ারদের।’
এশিয়াডের সেমি-ফাইনালে হার একেবারেই মানতে পারছেন না সর্দার সিং। তিনি বলেন, ‘ম্যাচের শেষ মুহূর্তে আমরা খুবই খারাপ খেলেছি। তার মূল্য দিতে হয়েছে আমাদের। কোনও দলই হারতে চায় না। সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে চায়। মনে রাখবেন, লিওনেল মেসিও স্পট কিক মিস করেছেন।’
হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানে কী ! সর্দার সিং বলেন, “অবসর ঘোষণার আগে চণ্ডীগড়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এবার হকির থেকে জীবন নিয়ে ভাবে সময় হয়েছে।”