আমন্ত্রণ জানিয়েও শেষ মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিকাগো সফর বাতিল করেছিল রামকৃষ্ণ মিশন। এই ঘটনাকে পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও মুখ্যমন্ত্রীর সফর বাতিলের জন্য বিজেপি এবং আরএসএস-এর দিকেই আঙুল তুলছেন। কারণ মিশনের পাঠানো চিঠিতে ‘অপ্রত্যাশিত অসুবিধা’-র কথা উল্লেখ রয়েছে।
১১ জুন হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রীকে শিকাগোর বেদান্ত সোসাইটির তরফে একটি চিঠি দিয়ে ২৬ অগস্টের ওই অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা জানানো হয়। বিশেষ সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী মিশনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘২৬ আগস্ট শিকাগোর আর্ট ইন্সটিটিউট হলে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের বক্তৃতার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করায় আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু খুব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, রামকৃষ্ণ মিশনের সহ সাধারণ সম্পাদক এবং রামকৃষ্ণ মিশনের পরিচালক বর্গের অন্যতম সদস্য স্বামী অভিরামানন্দের আকস্মিক মৃত্যু এবং অন্য কিছু ‘অপ্রত্যাশিত অসুবিধার’ জন্য ২৬ আগস্টের অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হচ্ছে। আপনার অসুবিধা হওয়ার জন্য আমরা দুঃখিত। সর্বদা আমাদের সমর্থন জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শ্রীরামকৃষ্ণ, মাসারদা এবং স্বামী বিবেকানন্দের কাছে আপনার সফল, সুস্থ এবং দীর্ঘ জীবন কামনা করি। আশা করি তাঁদের আশীর্বাদে ভবিষ্যতে কোনওদিন আমাদের শিকাগোর সেন্টারে আপনি আসবেন’।
চিঠির ‘অপ্রত্যাশিত অসুবিধা’-র কারণই দ্বন্দ্বে ফেলেছে। কারণ ওই একই সময় শিকাগোতে বিজেপি ও আর এস এস একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকলে প্রচারের সব আলো তাঁর দিকেই ঘুরে যেত। তাই আরএসএস এবং বিজেপি নিজেদের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বাড়াতেই কায়দা করে বেদান্ত সোসাইটির ওপর চাপ দিয়ে মমতার সফর বাতিল করিয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, কী সেই অপ্রত্যাশিত অসুবিধা, যার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সফর বাতিল করতে হল?