আচ্ছা আপনাকে যদি প্রশ্ন করি আপনার রাতের বিউটি কেয়ার রুটিন সম্পর্কে? শুধুই মুখে ক্রিম ঘষে সোজা ঘুমের দেশে? তাহলে বলবো এবার তাহলে সেই রুটিনের বদলের সময় এসেছে। কেন? তার দুটো কারণ। মন দিয়ে শুনুন।
কম বেশি রূপচর্চা আমরা সবাই করি। কিন্তু আমরা বেশিরভাগই মুখের ত্বকের যত্ন নিই। ফলে শরীরের অন্য অংশগুলো অবহেলিত থেকে যায়।আপনি যদি যথার্থই সৌন্দর্য সচেতন হন, তবে আপনাকে সেই দিকে নজর দিতে হবে বৈকি। বিশেষ করে হাত ও পায়ের সৌন্দর্যের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
এবার প্রশ্ন রাতেই কেন সমস্ত শরীরের যত্ন নিতে হবে? দিনের বেলায় তো নেওয়া যায়। নিশ্চয় যায়। তবে দিনের রূপ-রুটিন আলাদা। রাতের বেলায় একটা বেসিক স্কিন-কেয়ার রুটিন মেনে চললে আপনার ত্বকে আসবে স্বাভাবিক জেল্লা। কারণ আপনি যখন ঘুমোন, আপনার শরীর তখনও ব্যস্ত থাকে আপনার ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে সারাই করতে।
আর এই কারনেই একটানা কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পর আপনি যখন জেগে ওঠেন, তখন বেশ তরতাজা বোধ করেন। তবে পর্যাপ্ত ঘুম আপনাকে সুন্দর করে তোলে। তাই নিজেকে আরও সুন্দর করে তুলতে রাতের এই বিশ্রামের সময়টুকু কাজে লাগান। তার জন্য খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবেনা। সব মিলিয়ে ১০ মিনিট। এইটুকু সময়তো দেওয়াই যায়। তাই না?
ঘুমনোর সময় আপনার মুখের ত্বক যেন যথেষ্ট ময়শ্চরাইজড থাকে। সে আপনার ত্বকের ধরন যাই হোক না কেন। কারণ আমাদের স্লিপিং পজিশনের জন্য আমাদের মুখে নানাভাবে চাপ পড়ে। তা রিঙ্কল বা ফাইন লাইনের সমস্যা বাড়তে পারে। ত্বক শুষ্ক থাকলে তো সেই আশঙ্কা আরও বাড়ে।
নাইট ক্রিম তো আলাদা করে পাওয়াই যায়। অনেকে অ্যান্টি এজিং ক্রিমও ব্যবহার করেন।নিজের ত্বক অনুযায়ী বিউটি কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন। আবার আপনার ময়শ্চরাইজারে ভিটামিন ই মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। আর ঘুমোতে যাওয়ার আগে অবশ্যই চোখের উপর স্লিপ মাস্ক লাগিয়ে নিন। তাতে ঘুমনোর সময় আপনার চোখের চারপাশের ত্বক সুরক্ষিত থাকবে।
সারাদিন আপনার পা কত দৌরাত্ম্য সহ্য করেছে বলুন তো। বিশেষ করে পায়ের পাতা। রাতের বেলা তাই আপনার শ্রী-চরণ দুটি প্যাম্পার করার উপযুক্ত সময়। ভালো করে পা পরিষ্কার করে পায়ের পাতায় বেশ করে ভেসলিন লাগান। অথবা একটু ভারী ফুট ক্রিম লাগাতে পারেন। নারকেল তেলও চলবে। এবার পায়ে সুতির মোজা গলিয়ে আরামসে শুতে যান। বিছানাও তেল-চিটচিটে হবে না। আবার মোজার ভিতরে পায়ের ত্বক পুরো ক্রিমটা অ্যাবসর্ব করে নেবে।
হাতের যত্নও সমান জরুরি।সারা হাতে ভালো করে ময়শ্চরাইজার লাগিয়ে নিন।সেই সঙ্গে হাতের আঙুল ও নখের চারপাশে আলাদা করে ময়শ্চরাইজার লাগান। নখে এসেনশিয়াল অয়েল লাগাতে পারেন। ফলে নখ উজ্জ্বল হবে। নখের স্বাস্থ্যও থাকবে অটুট।
রাতে শুতে যাওয়ার আগে ঠোঁটে লাগান ভারী ক্রিম বা আমণ্ড অয়েল। ঠোঁটের ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে। সপ্তাহে নিয়ম করে বার দুয়েক লিপ স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
এই টিপসটা বেশ পুরনো। কিন্তু চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে এতো কার্যকরী বিকল্প হয়না। তাই আবার মনে করিয়ে দিই, রাতের অন্য রুপ-রুটিন সারা হয়ে গেলে ভ্রু-জোড়ায় আর চোখের পাতায় ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিন। আপনি ঘন কালো চোখের পাতা চান কিনা বলুন? ক্যাস্টর ওয়েল চোখের পাতার ঘনত্ব ও দৈর্ঘ্য বাড়াতে সাহায্য করবে। ফুরিয়ে যাওয়া মাস্কারার টিউব পরিষ্কার করে নিয়ে তাতে ক্যাস্টর অয়েল ভরে নিন। খেয়াল রাখবেন টিউবটি যাতে স্বচ্ছ হয়। এবার মাস্কারার ব্রাশ দিয়ে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিন। ঠিক যেমন ভাবে আপনি মাস্কারা লাগান সেই ভাবে।
এই রূপ-রুটিন মেনে চললে দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই ফল পাচ্ছেন। সুন্দর জেল্লাদার ত্বকের অধিকারিণী হতে গেলে শুধু দরকার একটু উদ্যোগ। ব্যস। আর কিছু নয়।