অনেকেই দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্তে নানারকম মন্তব্য করছেন। অনেকেই এটাকে খয়রাতি বলছেন (২০১৩ সালে অনেকেই কন্যাশ্রীকেও খয়রাতি বলেছিলেন, সেটা আলাদা প্রসঙ্গ)। অনেকে বলছেন পুজো কমিটিকে টাকা না দিয়ে ব্রিজ সারাই হোক, ইত্যাদি। নানা মুনির নানা মত যাকে বলে আর কি।
বাস্তব কি? যে ২৮ কোটি টাকা বাংলা জুড়ে প্রায় ৩০,০০০ পুজো উদ্যোক্তাদের দেওয়া হবে, সেটা পুলিশের ‘কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ এর অন্তর্গত। কি এই কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম? শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, ক্রীড়া সহ নানা ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা।
যেমন কলকাতা পুলিশ প্রবীণ নাগরিকদের নিয়ে শুরু করেছে ‘প্রণাম’ কিংবা পথশিশুদের কল্যাণে চালু হয়েছে ‘নবদিশা’ কর্মসূচি। স্কুলের ছাত্রীদের আত্মসুরক্ষার পাঠ দেওয়া ‘সুকন্যা’ প্রকল্পও কিন্তু এইরকম একটি কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম।
এই উদ্যোগে যদি স্থানীয় পুজো উদ্যোক্তাদের সামিল করা হয়, তাহলে কোন মহাভারত অশুদ্ধ হবে? আখেরে লাভ তো সাধারণ মানুষেরই। পূর্ত দপ্তরের বাজেট থেকে তো এই টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে ব্রিজ সারাইয়ের সাথে এর তুলনা কেন? কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করলে ব্রিজ সারানো যাবে না, এরকম কোথাও লেখা আছে?
সুকন্যা, নবদিশা, প্রণাম ইত্যাদি কর্মসূচির ফলে লাভবান হয়েছেন হাজার মানুষ। এই ২৮ কোটি টাকার ফলে ব্যাপ্তি বাড়বে অনেকটাই। তা সত্ত্বেও কিছু মানুষ না জেনে, না শুনে, কিছু চ্যানেল আর ট্রোল পেজের মিম দেখে বোদ্ধার মত ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে যেভাবে ঝুড়ি ঝুড়ি জ্ঞান দিচ্ছেন, তাতে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই। কথায় বলে, অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এই ভয়ঙ্কর সত্যতা বৃহদাকার নিচ্ছে।
( মতামত লেখকের ব্যক্তিগত )