পেট্রোল ও ডিজেলের দাম লিটারপিছু ১ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আজ মঙ্গলবার নবান্নে একথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের মানুষের উপর থেকে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা লাঘব করতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে’। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার রাত ১২ টার পর থেকেই লাগু হবে নয়া দাম৷ পেট্রোল বা ডিজেল কিনলে বর্তমান দামের উপর ১ টাকা করে ছাড় পাবেন রাজ্যবাসী৷
টানা এক সপ্তাহের ধরে বিশ্ববাজারে পেট্রোল-ডিজেলের দাম উর্ধমুখী। পাল্লা দিয়ে নামছে টাকার মূল্য। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন পরিস্থিতিতেও কোনও হেলদোল নেই মোদী সরকারের। তাদের এমন অবিবেচক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল ভারত বনধের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। তাতে লাভের লাভ হয়নি কিছুই। পেট্রোল ডিজেলের দামে লাগাম টানতে এরপরেও কোনও উদ্যোগ নেয়নি মোদী সরকার। কিন্তু রাজ্যবাসীর কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকারের তরফে বাংলার বাজারে পেট্রোপণ্যের দামে লিটার পিছু ১ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে পরিসংখ্যান তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধায় বলেন, ‘২০১৬-র সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৯ বার এক্সাইজ ডিউটি বাড়়িয়েছে কেন্দ্র। এই ৯ বারে মোট ১১ টাকা ৭৭ পয়সা বেড়েছে এক্সাইড ডিউটি। ২০১৬-র জানুয়ারিতে লিটার পিছু পেট্রোলের দাম ছিল ৬৫ টাকা ১২ পয়সা। সেই দাম বেড়ে ২০১৮-র সেপ্টেম্বরে লিটার পিছু পেট্রোলের দাম এসে ঠেকেছে ৮১ টাকা ৬০ পয়সায়। একইরকমভাবে ঊর্ধ্বমুখী ডিজেলের দামও। ২০১৬-র জানুয়ারিতে ১ লিটার ডিজেলের দাম ছিল ৪৮ টাকা ৮০ পয়সা। সেটাই বাড়তে বাড়়তে এখন লিটার পিছু এসে দাঁড়িয়েছে ৭৩ টাকা ২৬ পয়সায়। যদিও এই সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকার সেলস ট্যাক্স ও সেস এক পয়সাও বাড়ায়নি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য এদিন মোদী সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দাগেন মমতা। বলেন, ‘বিশ্বের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে গিয়ে দেশের মানুষকেই দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে মোদী সরকার। বার বার কেন্দ্রের কাছে এক্সাইজ ডিউটি কমানোর জন্য দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মানুষকে সুরাহা দিতেই মাথায় ৪৮ হাজার টাকা ঋণের বোঝা নিয়েও কর ছাড়ের পথে হাঁটল বাংলার সরকার’।