শরিক হয়েও মাঝে মধ্যেই সিপিএমের উল্টো পথে হেঁটে সমস্যা তৈরি করে ফরওয়ার্ড ব্লক। ফলে বিপাকে পড়তে হয় বামেদের। ফব নেতৃত্বকে বুঝিয়েও লাভ হয় না কোনও। এ যেন অবাধ্য ছোটভাইকে বাগে আনার ব্যর্থ চেষ্টা। এবারও সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হল না। পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেসের ডাকা ভারত বনধে সিপিএম শামিল হলেও পাশে দাঁড়াল না ফরওয়ার্ড ব্লক। সাংবাদিক সম্মেলনে ফব রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বনধ সফল করার কর্মসূচীতে থাকছে না ফরোয়ার্ড ব্লক। নামবে না রাস্তাতেও।
ফরওয়ার্ড ব্লকের এমন সিদ্ধান্তে অশনি সংকেত দেখছে রাজ্যের বাম নেতৃত্ব। দলে যে ফাটল ধরছে ফব-র আচরণ থেকেই তা পরিষ্কার। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট শরিকের এমন ঘন ঘন বিদ্রোহে লাগাম পড়াতে না পারা আলিমুদ্দিনের রাশ হালকা হওয়াই প্রমাণ করে।
বনধে না থাকার কারণ হিসাবে কেন্দ্রের নেতৃত্বকেই দুষেছে ফরোয়ার্ড ব্লক। রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ছটি বাম দল নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় বামফ্রন্ট কমিটি বিষয়টি আমাদের জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি। এমনকি আজকের সংবাদ মাধ্যমে বন্ধ ডাকা দলের লিস্টে ৬টির বদলে পাঁচটি বামদলের নাম বেরিয়েছে। এতেই পরিষ্কার হয়ে যায় সব কিছু। আমরা রাস্তায় নামছি না।’
প্রসঙ্গত, ডিজেল, পেট্রোল ও রান্নার গ্যাসে অত্যধিক দাম বৃদ্ধি হওয়ায় কংগ্রেস বন্ধ ডেকেছে। ওইদিন জনজীবন স্বাভাবিক রাখার জন্য রাজ্য সরকার থেকে সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থ দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, যাঁরা ওইদিন অনুপস্থিত থাকবেন তাঁদের একদিনের ছুটি ও বেতন কাটা যাবে। এমনকী অর্ধদিবস ছুটিও নেওয়া যাবে না। তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হয়েছে তারা বন্ধকে সমর্থন না করলেও ইস্যুগুলিকে সমর্থন করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ইতিমধ্যে জ্বালানির দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন।
এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি বন্ধকে সফল করতে কর্মীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অধীর নিজের ছবি পোস্ট করেছেন এদিন। কর্মীদের অধীরের বার্তা, সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত বন্ধ সফল করুন।
ধর্মঘটে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার জন্য রাজ্য সরকার অতিরিক্ত সরকারি বাস, লঞ্চ চালাবে। জোর করে বন্ধ করা যাবে না। রাস্তায় যে গাড়ি নামবে, তার কোনও ক্ষতি হলে বিমার ব্যবস্থাো করেছে রাজ্য সরকার।