মাঝেরহাট ব্রিজের গা ঘেঁষেই চলছে মেট্রোর কাজ। ফলে অনেকটা এলাকা জুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। এতেই আলগা হয়েছে মাটি। আর তার ফলেই ভেঙে পড়েছে মাঝেরহাট ব্রিজ। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে পূর্ত দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই ব্রিজ ভাঙার ঘটনার তদন্তে মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে ফরেনসিক তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের সুরেই দার্জিলিং থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে ভাইব্রেটরের মাধ্যমে পিলারের জন্য গর্ত খোঁড়ার কাজ চলাতেই ওই ব্রিজটি দুর্বল হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট সামনে এলেই গোটা বিষয়টি জানা যাবে। যে কারণেই ব্রিজ ভেঙে থাক না কেন, এটা ক্রিমিনাল অফেন্স। যে বা যাঁদের গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। তবে মেট্রো রেলের তরফে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার জিটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠক শেষ হওয়ার পর রিচমন্ড হিলে ফিরে এসেই দুর্ঘটনার খবর পান তিনি। উদ্ধারকাজ পরিচালনা ও জখমদের হাসপাতালে পাঠানোর জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মেয়র তথা দমকল মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দার্জিলিংয়ের যাবতীয় কর্মসূচি বাতিল করে কলকাতায় ফেরার তোড়জোড় শুরু করেন। কলকাতায় ফেরার জন্য চার্টার্ড ফ্লাইটেরও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তুমুল বৃষ্টিতে সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বুধবার সকালে ম্যালের অনুষ্ঠানটি শেষ করে কলকাতায় ফিরবেন। পরে দার্জিলিংয়ের সরকারি বাসভবন রিচমণ্ড হিল থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তবে ভাঙা পড়া অংশের নীচে একটি ছাউনিতে রেলের কাজে নিযুক্ত তিন-চারজন শ্রমিকের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। জখম ব্যক্তিদের চিকিৎসার খরচ ছাড়াও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে’।