বাংলার পর ত্রিপুরাও হাতছাড়া হয়েছে সিপিএমের। বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও অধিকাংশ আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি তারা। বামেদের এমন দুরবস্থার ছবি পড়শি বাঙালি রাজ্য ত্রিপুরাতেও দেখা যাবে কি না, তাইনিয়ে এখন শুরু হয়েছে জোর চর্চা। কারণ, সেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। চলতি মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরার অর্ধেক পঞ্চায়েত আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মানিক সরকারদের নেতৃত্বাধীন সিপিএম এই পরীক্ষায় আদৌ পাশ করতে পারে কি না, তাকে ঘিরেই শুরু হয়েছে এই চর্চা।
আজ মঙ্গলবার নির্বাচনের নোটিফিকেশণ। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর। ৩০ তারিখ ভোট হওয়ার পর তিনদিনের মাথায়, অর্থাৎ ৩ অক্টোবর হবে গণনা। স্বাভাবিকভাবে কমিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তৎপরতা।
বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের পরাজয়ের পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ছবিই ফুটে উঠেছিল ত্রিপুরাতেও। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর রাজ্যপাট থেকে বিদায় নেওয়া সিপিএমের বহু নেতা-কর্মী-সমর্থক আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ঘরছাড়া হন। মার্কসবাদী দল ও গণসংগঠনের কয়েকশো অফিসের সঙ্গে লেনিন-কার্ল মার্কসের মূর্তি ভাঙচুরের কবলে পড়ে। ক্ষমতা বদলের সঙ্গে প্রশাসনের মনোভাবও আমূল পাল্টে যাওয়ায় সংগঠনের বুকে বল জোগানোর মতো অবস্থাও ছিল না নেতাদের। এই পরিস্থিতিতে গ্রামাঞ্চলে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা ভোগ করে আসা সিপিএম-সহ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির প্রতিনিধিদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের অভিযোগ, ‘বিজেপি ভয় দেখিয়ে বহু আসনে জয়ী প্রতিনিধিদের ইস্তফা দিতে বাধ্য করিয়েছে। তার ফলেই এই উপনির্বাচনের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে গ্রামের মানুষকে’।
সিপিএমের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি নেতা তাপস ভট্টাচার্যের দাবি, ‘মানুষের কাছ থেকে দল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বিধানসভার পর এই উপনির্বাচনেও নিশ্চিত পরাজয় বুঝে এখন থেকে ওয়াকওভার দেওয়ার ফন্দি খুঁজছে সিপিএম’।
পঞ্চায়েতের উপনির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কত আসনে প্রার্থী দিতে তারা সক্ষম হবে, সেটা এখনও বুঝে উঠতে পারেনি রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। বিভিন্ন জেলা পার্টির সঙ্গে তারা যোগাযোগ করে বাস্তব পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে। তবে আপাতত সব আসনেই বামেরা লড়বে বলে মৌখিক ঘোষণা করেছে তারা। তবে শেষ পর্যন্ত বিজেপি-কে রুখতে ‘নীচুতলায়’ বিজেপি বিরোধী জোট হয় কি-না সেটাই এখন দেখার।