ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন শুরু হতেই জেলায় জেলায় হিংসা ও সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিয়েছে। সামগ্রিক বিচারে তা নগণ্য হলেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটায় বিষয়টিকে আর লঘুভাবে নিছে না তৃণমূল। শান্তি বজায় রাখতে তাই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জেলাস্তরে ১৯টি জেলা পরিষদের সভাধিপতি থেকে পদাধিকারী নির্বাচন, সব ক্ষেত্রেই রাশ রাখছেন নিজের হাতে।পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্ধারণেও তাঁর অনুমোদন নিতে হবে। এর অন্যথা কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন নেত্রী।
পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে হিংসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি-সহ বিরোধী দল বাইরের লোক এনে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে। পুলিশের ওপরেও হামলা চালানো হচ্ছে। মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। বোর্ড গঠনের এই পর্বে আমাদের তিন জন কর্মীর প্রাণ হারিয়েছে’। মৃতদের জন্য শোকপ্রকাশও করেছেন তিনি। এবিষয়ে তিনি জানিয়েছেন যে কোনও মৃত্যুই দুঁখজনক। সে যে দলেরই হোক’। তাই রাজ্যে শান্তি ফেরাতে রাজ্য প্রশাসনকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ১৯টি জেলা পরিষদের পধাধিকারী বাছাই শুরু হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ব্লক থেকে জেলাস্তরে আলোচনার পর সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কে হবেন, তাঁর নাম পাঠাতে হবে দলের কেন্দ্রে। একাধিক নাম থাকলেও তা পাঠাতে হবে। পার্থবাবু বলেন, ‘নেত্রীর নির্দেশ, কোনও নামই আঞ্চলিক স্তরে চূড়ান্ত করা যাবে না। শীর্ষ স্তরের অনুমোদন লাগবে। নেত্রীর এই নির্দেশ অমান্য করলে সংগঠনে তাঁর কোনও জায়গা হবে না’।
প্রসঙ্গত, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় জেলার সভাধিপতির প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক গুরুত্ব বস্তুত একজন মন্ত্রীর মতো। গ্রামীণ উন্নয়নে গত সাত বছরে রাজ্যে যে সাফল্য এসেছে, তাতে জেলা পরিষদগুলির ভূমিকা অনস্বীকার্য। স্বভাবতই, উন্নয়নের সেই ধারা আরও ত্বরান্বিত করতে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাই পঞ্চায়েতের সর্বোচ্চ স্তরের পদাধিকারী স্থির করার মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।