ফিরে এলো পিকে–অমল জমানা। দুই কোচের তরজা, ভোকাল টনিক অন্য মাত্রা দিত ডার্বিকে।
১৯৯৭ সালের ফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালের কথা অনেকেরই মনে আছে। ১৩ জুলাই যুবভারতীতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল অমল দত্তর ডায়মন্ড সিস্টেম। পিকের ইস্টবেঙ্গল ৪–১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল সবুজ–মেরুনকে। ম্যাচের আগে প্রয়াত কোচ অমল দত্তর মুখে, বাইচুং নাকি চুংচুং, ওমোলো আবার ওমলেট, সোসো নাকি শসা, এই কথাগুলি লাল–হলুদ ফুটবলারদের তাতিয়ে দিয়েছিল। বাইচুং করেছিলেন হ্যাটট্রিক। যুবভারতী ছিল কানায়–কানায় পূর্ণ। সরকারি হিসেব বলছে মাঠে সেদিন হাজির ছিলেন ১,৩১, ৭৮১ জন ফুটবল পাগল জনতা।হেরে গেলেও অমল দত্তর ডায়মন্ড সিস্টেম ফুটবল প্রেমীদের মন জিতে নিয়েছিল।
গুরু–শিষ্য মনে করাচ্ছেন পিকে–অমল জমানা। একদিকে শিষ্য শঙ্করলাল। তো অন্যদিকে গুরু সুভাষ ভৌমিক। মোহন–ইস্ট দু’দলই সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে পয়েন্ট তালিকায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। গোলপার্থক্যও সমান। ফলে রবিবারের ডার্বির উন্মাদনা বেড়ে গেছে হুহু করে। টিকিটের জন্য চলছে হাহাকার। ইতিমধ্যেই টিকিট না পেয়ে যুবভারতীতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সমর্থকরা।
অনলাইনে এবারই ডার্বির টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য ফুটবল সংস্থা। যা নিমেষে উড়ে গেছে। অফলাইনেই যা টিকিট পড়ে আছে। তার জন্যও আবার লম্বা লাইন। আইএফএ অফিসে টিকিট দেওয়া চলছিল। যা নিঃশেষিত। মোহন–ইস্ট তাঁবু থেকে শুক্রবারও টিকিট দেওয়া হয়েছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত টিকিট দেওয়া চলবে। আর লাইন? দুই ক্লাবেই লাইনের শেষ দেখা যাচ্ছে না। পাছে ঝামেলা হয়? পুলিসি প্রহরায় চলছে টিকিট বিক্রি। রয়েছে ঘোড়সওয়ার পুলিসের দাপাদাপি। যুব বিশ্বকাপের জন্য যুবভারতী নতুনভাবে গড়ে উঠেছে। এখন মেরেকেটে হয়ত ৬৮০০০ দর্শক খেলা দেখতে পাবেন। তাই ডার্বির মহার্ঘ টিকিট অনেকেই হয়ত পাবেন না।
রবিবার গোটা যুবভারতী থাকবে কানায়–কানায় পূর্ণ। টিকিট বিক্রির যা হাল, তাতে একটা আসনও খালি থাকবে না। জিতবে কে? সবুজ মেরুন না লাল–হলুদ? জনতার নয়ণের মণি কে হবেন? ডিকা না আমনা? সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই ক্লাবের সদস্য–সমর্থকরাই তরজা শুরু করে দিয়েছেন। জিতবে কারা? মোহনবাগান। গোল করবে কে? আমনা ছাড়া আবার কে। দুই দলই প্রস্তুত। শেষমুহূর্তের ঘষামাজা হয়ে গেছে। এখন শুধু জন্মাষ্টমীর বিকেলে পরীক্ষায় নেমে পড়ার অপেক্ষা।
রবিবার দুপুরে শহরের সব রাস্তা গিয়ে মিশবে যুবভারতীতে। কাদাপাড়া থেকে বেলেঘাটা বিল্ডিং মোড়। দখল নেবে সমর্থকরা।
এই তো ডার্বির মজা। এটাই তো বাঙালির ফুটবল উন্মাদনা। যা সত্যি হারিয়ে গিয়েছিল। পিকে–অমল জমানা যেন বছর কুড়ি পড়ে ফিরিয়ে আনলেন গুরু–শিষ্য। শেষ হাসি হাসবেন কে? শঙ্করলাল না সুভাষ? অপেক্ষা আর কয়েক ঘন্টার।