রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্ময়প্রকাশ করে বলেন বিমুদ্রাকরণের ফলে কত লক্ষ কোটি টাকার কালো অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে বলে জানিয়েছিল সরকার, সেইসব কোথায় গেল! তাঁর কথায়, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসের নরেন্দ্র মোদীর ওই সিদ্ধান্তের পর প্রায় উনিশ মাস কেটে গেলেও তেমনভাবে কোনও লাভই হয়নি অর্থনীতিতে। বরং, এর ফলে বহু কালো টাকার মালিক তাদের টাকাকে সাদা করে ফেলতে পেরেছে। মমতা বলেন, এমনকি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াও জানিয়েছে, প্রায় সব বাতিল নোটই ফের ফিরে এসেছে ব্যাঙ্কের কাছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব হওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূলের ভয়কে সত্য বলেই প্রমাণ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট। ফেসবুকে নিজের পেজ থেকে একটি প্রশ্ন করে তিনি বলেন যে, তিনি জানতে চান, কালো টাকাগুলো সব কোথায় গেল?
তাঁর এই পোস্টের নেপথ্যে রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট। যেখানে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে যে, বাতিল পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোটের মধ্যে ৯৯.৩ শতাংশই পুনরায় ব্যাঙ্কের কাছে ফিরে এসেছে। বাতিল নোটে মোট অর্থের পরিমাণ ছিল ১৫.৪১ লক্ষ কোটি টাকা।
“আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ২০১৭-২০১৮ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, বাতিল অর্থের মধ্যে ৯৯.৩ শতাংশ অর্থই পুনরায় ফিরে এসেছে ব্যাঙ্কের কাছে। আমার প্রথম প্রশ্ন হল, তাহলে কালো টাকাগুলো সব গেল কোথায়? দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, এই বিমুদ্রাকরণ প্রক্রিয়ার ফলে কি তবে এক শ্রেণির মানুষ তাদের কালো টাকাকে সাদা করে নিল?”, রীতিমতো উষ্মাপ্রকাশ করে তিনি বলেন তাঁর ফেসবুক পোস্টে।
নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করার খানিকক্ষণ বাদেই মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, তাঁর মতে, এটি একটি জনবিরোধী পদক্ষেপ।
“এই পদক্ষেপের ফলে গোটা দেশের সাধারণ খেটে কাওয়া নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অত্যন্ত বিপদে পড়বেন ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসায়ীরাও”, বলেছিলেন মমতা।
অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জার ব্যাপার এটা”, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট প্রকাশের পর বলেন মুখ্যমন্ত্রী।