বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতি আরও উন্নত করতে এবার সমবায়ের মাধ্যমে সরাসরি ধান সংগ্রহ করা হবে। অ্যাকাউন্টে টাকা পাবেন কৃষকরা। মাঝে কেউ থাকবেন না। এই উদ্যোগ সফলের দায়িত্ব নিতে হবে সমবায়গুলিকেই। নজরুল মঞ্চে সমবায় সমিতিগুলিকে নিয়ে আলোচনাচক্রে এমনটাই জানালেন রাজ্যের চার মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ফিরহাদ হাকিম, তপন দাশগুপ্ত।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, কোনও মতেই ধানের অভাবী বিক্রি যাতে না হয় তার জন্য উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই লক্ষ্যে ‘প্যাডি প্রোকিওরমেন্ট সেন্টার’ গড়া হচ্ছে। কালীপুজোর আগে সমবায়ের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ অভিযান হবে। গ্রামে ক্যাম্প করে ধান সংগ্রহ হবে। লক্ষ্য, কৃষকরা যাতে আরও বেশি টাকা পান। তিনি বলেন, ধানের টাকা সরাসরি চলে যাবে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মাঝে আর কেউ থাকবে না। উদ্যোগ সফলের দায়িত্ব নিতে হবে সমবায়গুলিকে। কোথায় ধান আছে, টোল–ফ্রি নম্বরে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৩ হাজার সমবায় ধান সংগ্রহে কাজ করবে। তিনি বলেন, রাজ্যের হাতে যা চাল আছে তাতে মিড–ডে মিলের জন্য আরও ৪ লক্ষ মেট্রিক টন দেওয়া সম্ভব। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্র বঞ্চনা করে চলেছে। মিড–ডে মিল–সহ বিভিন্ন প্রকল্পে চাল নিচ্ছে অথচ টাকা দিচ্ছে না। এখনও ৩০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। আমরা রাজ্যে ২৫০টি কিসান মান্ডি করেছি। অথচ অন্য রাজ্যের তুলনায় এক্ষেত্রে শ্রমিকদের মজুরি কম দিচ্ছে কেন্দ্র।
সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ধান সংগ্রহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমরা প্রস্তুত। রাজ্য কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে চলতি আর্থিক বছরে ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা কৃষিঋণ ধার্য করেছে। ১ লক্ষ পরিবারকে স্বনির্ভর হতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ১৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, এ রাজ্যে কৃষকদের জন্য রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্ক যা ঋণ দিয়েছে, সমবায় ব্যাঙ্ক তার থেকে বেশি দিয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে বাংলা এখন প্রথম দিকে। আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সমবায়ের মাধ্যমে সংরক্ষণ ব্যবস্থা করলে ‘সুফল বাংলা’ হবে। সমবায় কর্মীদের উদ্দেশে পার্থবাবুর মন্তব্য, আপনারা আরও বেশি কাজ করুন। তাতে রাজ্যে আরও বেশি কর্মসংস্থান হবে।
পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, সমবায় একটা আন্দোলন। যা অর্থনীতিকে বদলে দিতে পারে। বাংলা দেখিয়েছে। দিল্লিকে শিখতে হবে। তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য বাংলা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। আগের তুলনায় তাঁরা তিন গুণ আয় করছেন। কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, জন্ম থেকে মৃত্যু— সব ক্ষেত্রে মানুষের পাশে রয়েছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। ভারত কেন, বিশ্বের কোথাও এমনটা হয়নি। সমবায়ের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ ধান কেনা হচ্ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ঋণ নিয়ে কেউ পশুপালন করছেন, কেউ ব্যবসা।