তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হারের পর থেকেই বাংলায় কোনঠাসা সিপিএম। আর এখন সারা দেশের তাদের অস্তিত্ব তলানিতে। বামেদের গড় এখন দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। আন্দোলনে নামা নিয়েও সংশয়ে ভুগছে তারা। এমনটাই মনে করেন নোবেল জয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর কথায়, ‘ছোট বেলায় আলোচনা শুনতাম ভগবান আছে কি-না। এখন আলোচনা শুনি সিপিএম আছে কি-না।’
প্রতীচি ইনস্টিটিউশনের ‘ভারত কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান বক্তা হিসাবে কলকাতার শিশির মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অমর্ত্য সেন। সেখানেই দেশের অশান্ত সময়ে বামপন্থীদের ভূমিকা সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেন অমর্ত্য সেন। বলেন, ‘বামপন্থী বলে বাম ছাড়া অন্য কোনও দলের হাত ধরা যাবে না, এমন ছুৎমার্গ থেকে বামেদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
অসমের এনআরসি প্রসঙ্গে বামেদের আন্দোলন বিমুখতাকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের গলায় তৃণমূলের প্রশংসা।
বললেন, ‘এনআরসি নিয়ে বামপন্থীদের আগে অসমে গিয়ে তৃণমূল প্রতিবাদ জানিয়ে এল। এটা বামেদের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। ছোট বেলায় আলোচনা শুনতাম ভগবান আছে কি-না। এখন আলোচনা শুনি সিপিএম আছে কি-না।’
অমর্ত্যর মতে, ‘স্বৈরাচারী শক্তিকে হঠাতে এখানে বলা হচ্ছে সিপিএম পারবে না। এঁদের হঠাতে বিজেপি-কে চাই। এমন কথা হচ্ছে কারণ সিপিএমের আন্দোলনের তেজ কমে গিয়েছে। আন্দোলনের তেজ বাড়ানো দরকার’। লোকসভা ভোট প্রসঙ্গেও নিজের মতামত জানিয়েছেন অমর্ত্য। ‘২০১৪ সালের ভোটে বিজেপি পার্লামেন্টে ৫৫ শতাংশ আসন পেল। কিন্তু ভোট পেয়েছিল ৩১ শতাংশ। এটাকে সংখ্যাগুরু বলা যায় না। বিজেপি ভারতের নিরিখে এবং হিন্দুদের মধ্যেও সংখ্যালঘু’ বলে মত অর্থনীতিবিদের। নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘মেজরিটি সঙ্গে দাম্ভিকতা আছে, তাও মেনে নেওয়া হবে। এমন ভাবনা যদি তাঁদের থাকে তবে সেটা ভুল। নির্বাচনে এখানে যা হবে সেটা সংখ্যাগুরুর ওপর নির্ভর করবে না’।