তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর অপকর্ম নিয়ে তদন্তও হয়েছে। এরপরেই দলের নেতাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন কোডিয়ারি বালকৃষ্ণাণ ঘনিষ্ঠ নেতা ই পি জয়রাজন। এমন কাজ ভবিষ্যতে আর হবে না বলে অঙ্গীকার করায় কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন তাঁর মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে আনলেন বহু বিতর্কিত সিপিএম নেতা জয়রাজনকে। দল জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ থাকলেও কোনও রকম আর্থিক দুর্নীতি ছিল না। সেকারণেই তদন্তে তাঁকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে। তারপর তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে পুরনো শিল্প দপ্তরে।
গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। পুনর্নিয়োগের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাঁরা। বিরোধীদের কথায়, ন্যূনতম নৈতিকতা থাকলে সিপিএম এই কাজ করত না। স্বজনপোষণের বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। তাছাড়া গোটা রাজ্য যখন বানভাসি, তখন জয়রাজনকে ক্যাবিনেটে ফেরানোর বাহুল্য দেখানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
জয়রাজনের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে ২০১৬ সালে। নিজের শ্যালিকা তথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য তথা সংসদ সদস্যা পি কে শ্রীমতীর ছেলে সুধীর নাম্বিয়ারকে কেরল রাজ্য শিল্প নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করেন জয়রাজন। আরও এক আত্মীয়াকেও বসান অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে এই নিয়োগকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবে রাজ্যে শোরগোল পড়ে যায়। দলের অন্দরেও সমালোচনা হয়।
এরপরেই আসরে নামতে বাধ্য হন সীতারাম ইয়েচুরি। ক্লিনচিট না পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে মন্ত্রিসভার বাইরে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। জয়রাজন ও শ্রীমতী দু’জনকেই দলীয় তদন্তের সামনে জবাবদিহি করতে বলা হয়। জয়রাজন তাঁর ঘনিষ্ঠ হলেও বিজয়ন গোটা বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিস্থিতির চাপে জয়রাজনকে ওই বছরের অক্টোবরে পদত্যাগ করতে হয়। দলীয় তদন্তের পাশাপাশি রাজ্য ভিজিল্যান্স দপ্তরও তদন্ত শুরু করে। তিরুবনন্তপুরম হাইকোর্টে এনিয়ে জনস্বার্থে মামলা হয়। তবে ভিজিল্যান্স দপ্তর তদন্ত করে জানায়, ওই দুটি নিয়োগের পিছনে কোনও আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মেলেনি। তাই দুর্নীতি নিরোধক আইনে জয়রাজনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। হাইকোর্টও সবপক্ষের বক্তব্য শুনে জয়রাজনকে ক্লিনচিট দেয়।