বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে এখন খুঁটিয়ে লক্ষ্য করছেন চিৎপুরের সীতা ঘোষ। শুধু মমতার চলন-বলন, কথা বলার ধরণ নয়, তাঁর রাজনৈতিক বুদ্ধিরও বিশ্লেষণ নিয়েও চর্চা করছেন। তবেই না মঞ্চে মমতাকে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন! পরিচালক উত্তম মাইতিও কড়া নজর রেখেছেন দেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতির উপরেও। প্রযোজক আশিস প্রামাণিকের সঙ্গে গো-রক্ষার নামে জুলুমবাজি, লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের পদক্ষেপ নিয়ে চলছে আলোচনা।
আসতে চলেছে নতুন পালা ‘মমতার ডাকে দিল্লী চলো’। শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে মমতা যে আহবান করেছিলেন, সেটাকেই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফেলে তৈরি হচ্ছে পালা। কিন্তু হঠাৎ মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে পালা বাঁধা কেন? উত্তরে হাসছেন পরিচালক উত্তম মাইতি এবং প্রযোজক আশিস প্রামাণিক। তাঁদের বক্তব্য, বংলায় মমতাকে নিয়ে যাত্রাপালা নতুন নয়। তৃণমূল প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতাকে নিয়ে পালা বাঁধা শুরু হয়েছিল। গ্রামে-গঞ্জে এখনও মমতার জনপ্রিয়তা বিপুল। সেটাকেই মূলধন করে মানুষ টানা যায় সহজে। একইসঙ্গে সরকারের উন্নয়নের কথাও পৌঁছে দেওয়া যায়। তাই মমতাকে নিয়ে এমন পালা বাঁধার ধুম।
এই যাত্রা স্ংস্থার প্রযোজক আশিস প্রামাণিক তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। তাঁর কথায়, ‘মমতাকে নিয়ে পালা বাঁধলে তৃণমূলের সমর্থকেরা তো আসবেনই। পাশাপা্শি অন্য দলের লোকজনও আসবেন। তাঁদের মধ্যে দু-একজনও মমতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হলে সেটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি হবে’।
স্বাভাবিকভাবেই পালার চরিত্ররা কথা বলছেন এই সময়ের রাজনীতি নিয়ে। তাই চরিত্ররা বিজেপি-র গো-রক্ষা থেকে অসমের এনআরসি তালিকায় নাম না থাকা মানুষদের মুখের কথাই বলছে। মমতার চরিত্রে অভিনয় করছেন সীতা ঘোষ। দীর্ঘ ২৮ বছর যাত্রার সঙ্গে যুক্ত। এর আগেও মা-মাটির লড়াই’ এবং বাংলার মসনদে মমতা’ নামের যাত্রাতে মমতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর কথায়, ‘দিদির চরিত্র অভিনয় করে তৃপ্তি পাই। সাফল্য যেমন মিলেছে তেমনই লোকের ভালোবাসাও পেয়েছি। এখন তো আর অন্য ভূমিকায় অভিনয় করতেই ইচ্ছে করে না’। একসময় মমতার হাত থেকে সেরা শিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন সীতা। এটা তাঁর প্রিয় স্মৃতি।
মমতার পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতার চরিত্রও থাকছে পালায়। চরিত্রদের নিখুঁত করে তুলতে যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে চান পরিচালক। এখন পুরোদমে চলছে পালা লেখার কাজ। পুজোর পরেই মঞ্চস্থ হবে ‘মমতার ডাকে দিল্লী চলো’। রাজ্য জুড়ে তো বটেই, প্রতিটা লোকসভা কেন্দ্রেই যাত্রা মঞ্চস্থ করতে চাইছেন সংস্থার কর্তারা।