রাজনীতিতে সৌজন্য যে শেষ হয়ে যায়নি তা আবার প্রমাণিত হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে। যেখানে তার প্রাক্তন দল শোকপ্রকাশ এর বিবৃতি দিতেই পাঁচ ঘণ্টা সময় নিল সেখানে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মমতা বোঝালেন কেন তিনি অন্যদের থেকে আলাদা।
গান স্যালুটে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হল লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। হাইকোর্ট ও বিধানসভায় তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন বহু মানুষ। তবে বাবার দল সিপিএম-এর প্রতি অভিমান ঝরে পড়ল সোমনাথ-কন্যা অনুশীলা বসুর গলায়। কোনও রাখঢাক না-করেই জানিয়ে দিলেন, ‘দল বাবার শরীরে লাল পতাকা দিতে চেয়েছিল। আমরা রাজি হইনি।’
২০০৮ সালে ইউপিএ সরকারের থেকে বামেরা সমর্থন তোলা নিয়ে দলের সঙ্গে মতবিরোধ হয় সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। তাঁর প্রয়াণের দিনে সেই প্রসঙ্গের উত্থাপন করে তাঁর মেয়ে অনুশীলা বললেন, ‘উনি সেই সময় কী কষ্ট পেয়েছেন জানি। তাই তাঁর মরদেহ দলীয় দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মা রাজি হননি। এখন মনে হয়, পার্টিতে ফিরে না-গিয়ে বাবা ঠিকই করেছেন। দলের যা করুণ অবস্থা, তা তিনি মেনে নিতে পারতেন না।’
সোমবার সকালে প্রয়াত হন লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। হাসপাতালে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন লোকসভার অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন। বেলা ১২.৩০ নাগাদ হাসপাতাল থেকে সোমনাথের মরদেহ প্রথমে হাইকোর্টে ও তারপর বিধানসভায় নিয়ে যাওয়া হয়। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হয় তাঁকে। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর রাজা বসন্ত রায়ের বাড়িতে। সন্ধে পর্যন্ত সেখানে শায়িত থাকবে দেহ। এরপর তাঁর দেহদান করা হবে এসএসকেএম হাসপাতালে।