জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ওই জ্বালাময়ী ভাষণ , কাব্য সাহিত্য থেকে যাবতীয় উদ্ধৃতি , তথ্য পরিসংখ্যান মুখস্ত বলে যাওয়া, ইতিহাস, বিজ্ঞান, বেদ-বেদান্ত থেকে জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য- সমস্ত কৃতিত্ব টেলিপ্রম্পটারের। নরেন্দ্র মোদী টেলিপ্রম্পটার দেখে ভাষণ দেন। দু দিকে দুটো টেলিপ্রম্পটার থাকে। নিরাপদ দূরত্বে বসে থাকা জনতা ভাবে , মোদীজি তাদের দিকে তাকিয়ে বলছেন। টেলিপ্রম্পটারের স্বচ্ছ ফাইবার গ্লাস স্ক্রিন এত দূর থেকে তাদের নজরে পড়ে না। মঞ্চের সামনে, সাউন্ড কনসোলে, শব্দ প্রকৌশলী দের ভিড়ে মিশে থাকেন টেলিপ্রম্পটার অপারেটর। যার কাজ ভাষণের সাথে সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে স্ক্রিন বেয়ে চালানো শব্দগুলো। মোদীর থামার সাথে সাথে স্ক্রিন বেয়ে চলা শব্দ লেখা গুলোও থেমে যায়, আবার তিনি সরব হওয়ার সাথে সাথে ফের চলতে শুরু করে। গণজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞরা বলেন, যারা টেলিপ্রম্পটার দেখে ভাষণ দেওয়ায় দক্ষ তারা আদতে বেশি উঁচুদরের অভিনেতা। তাদের স্বাভাবিক আবেগ, উচ্ছাস কম, নাটকীয়তায় নিজের মনের কথা বলে দেওয়ার কৌশল টুকুই তারা আয়ত্ত করেন কেবল।
মোদী কি টেলিপ্রম্পটার দেখে ভাষণ দেন? প্রশ্ন উঠেছিল ২০১৬ সালে। প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলে তুখোড় ভাষণ দিয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা দক্ষ ছিলেন এই ভাষণ পাঠে। তবে মোদী ভক্তরা মানতে নারাজ ছিল। ভক্তদের দাবি মোদীজি যে ভাবে ঘরের মাঠে যে ভাবে ভাষণ দেন সেই ভাবেই সেখানেই একই ভাবে বক্তৃতা করেছিলেন। তর্কটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতেই ছবিতে ছয়লাপ হয়ে যায় ট্যুইটার থেকে স্নাপচ্যাটে যেখানে দেখা যায় মোদীর দু পাশে উঁচিয়ে আছে টেলিপ্রম্পটার। ২০১৪ তে জুলাই মাসে ইসরো তে প্রথম এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। তারপর থেকে এটি তার মনে ধরে যায়।
বিদেশে গেলে, অথিতি স্বাগতিক অনুষ্ঠানে বা ইংরেজিতে ভাষণ দিতে হলে মোদী টেলিপ্রম্পটার ব্যবহার করে থাকেন।