রবীন্দ্রভারতী, বিদ্যাসাগর, কল্যাণী ও উত্তরবঙ্গ— রাজ্যের চার বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষার অনুমোদন সাময়িকভাবে বাতিল করল ইউজিসি। চলতি শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০১৮–’১৯ সালে এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত পড়ুয়া ভর্তি করতে পারবে না। দূরশিক্ষায় অনুমোদন পেয়েছে বর্ধমান ও নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। কী কারণে অনুমোদন দেওয়া হল না তা জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে ৩০ দিনের মধ্যে এই চার বিশ্ববিদ্যালয়কে ফের প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। ভর্তির মুখে হঠাৎ ইউজিসির এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যায় পড়তে চলেছেন হাজার হাজার পড়ুয়া।
চলতি শিক্ষাবর্ষে দূরশিক্ষায় পড়ুয়া ভর্তির জন্য নতুন করে আবেদন করেছিল রাজ্যের এই ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়। জুন মাসে দিল্লিতে একটি বৈঠকও হয়। তারপরই বৃহস্পতিবার যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। অনুমোদন পাওয়া দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েরও দূরশিক্ষায় বেশ কয়েকটি কোর্স বাতিল হয়েছে। আগামী দুটি শিক্ষাবর্ষের জন্য বর্ধমান ও তিনটি শিক্ষাবর্ষের জন্য নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দূরশিক্ষায় সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর পড়েছেন সুব্রত চক্রবর্তী। এখন এক বিএড কলেজে পড়ান তিনি। তাঁর কথায়, “দূরশিক্ষা চালু থাকলে অনেকেরই সুবিধে। চাকরি করতে করতেও পড়া যায়। অনেকে নিয়মিত পাঠ্যক্রমে পড়ার সুযোগ পায় না। তারাও দূরশিক্ষায় পড়তে পারে।” শালবনি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শান্তনু ধর বলেন, “দূরশিক্ষা বন্ধ হওয়ার ফলে অনেক ছাত্রছাত্রী সঙ্কটে পড়বেন।” তাঁর কথায়, “অনেকে চাকরি করতেন। তার ফাঁকেই দূরশিক্ষায় পড়াশোনা করতেন। এ বার সেই সুযোগ আর থাকছে না। এটা সমস্যারই।”
ইউজিসির এই সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্যের পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করছেন শিক্ষামহল। কারণ, প্রতি বছর রবীন্দ্রভারতী, বিদ্যাসাগর, উত্তরবঙ্গ ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষার কোর্সে প্রায় হাজার ষাটেক পড়ুয়া ভর্তি হন। অনুমোদন বাতিল হওয়ায় জেনারেল কোর্সে চাপ বাড়বে। একইসঙ্গে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও চাকরিজীবীরা এই সিদ্ধান্তের জেরে বঞ্চনার শিকার হবেন। প্রায় লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী প্রতি বছর দূরশিক্ষার কোর্সে ভরতি হন। উচ্চশিক্ষায় গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও কমে যাবে বলে আশঙ্কা শিক্ষাবিদদের।