রাফাল বিতর্কে এমনিতেই অস্বস্তিতে থাকা বিজেপি শিবিরকে আবার নতুন করে বেকায়দায় ফেললো বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে ওঠা আর্থিক গরমিলের অভিযোগ।
গতকালই অমিত শাহের বিরুদ্ধে রাজ্যসভা নির্বাচনে পেশ করা হলফনামায় তথ্য লুকনোর অভিযোগ সামনে আসায় রীতিমতো ফাঁপরে পড়েছে শাসক দল। বিরোধী দল কংগ্রেসের অভিযোগ, ছেলে জয় শাহকে ঋণ পাইয়ে দিতে নিজের সম্পত্তি বন্ধক রেখেছেন অমিত শাহ। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় নাকি সে বিষয়ের কোনও উল্লেখও করেননি তিনি।
নির্বাচনী হলফনামায় কোনও ব্যক্তির নামে থাকা সম্পত্তি ও ঋণ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক। তাই হলফনামায় নিজের সম্পত্তি সংক্রান্ত সঠিক তথ্য না দেওয়ায় অমিত শাহের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানোরও পরিকল্পনা করছে কংগ্রেস।
অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র অবশ্য বলেন, ‘‘অমিত শাহের সম্পত্তি বন্ধক রাখার অর্থ এই নয় যে, সেই ঋণ মেটানোর দায়িত্ব তাঁর। তিনি কেবল ছেলের ঋণের ‘কোল্যাটারাল সিকিউরিটি’ ছিলেন।’
কিন্তু অভিযোগ কেবল ওখানেই সীমাবদ্ধ নেই, উঠেছে বাড়তি নিয়মবহিৰ্ভূতভাবে আর্থিক সুবিধে পাইয়ে দেওয়ারও। অভিযোগ, জয় শাহের সংস্থার মূল্য ৬ কোটি টাকা হলেও, তিনি গুজরাতের দু’টি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৯৭.৩৫ কোটি টাকা ঋণ পান। যে দু’টি ব্যাঙ্ক অমিত শাহের ছেলে জয় শাহকে ঋণ দেয় তার মধ্যে একটি ব্যাঙ্কের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার হলেন গুজরাতের উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন পটেল ও তাঁর স্ত্রী।
অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। জয় শাহের সংস্থাকে প্রায় ১০.৩৫ কোটি ঋণ দেয় কেন্দ্রের পুনর্নবীকরণ শক্তি উন্নয়ন দফতর (আইআরইডিএ)। বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের রতলামে ২.১ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার জন্য জয়ের সংস্থাকে ওই ঋণ দেওয়া হয়েছিল। অথচ মন্ত্রকের নিয়ম ছিল, ৫ কোটি টাকার বেশি কোনও সংস্থাকে ঋণ দেওয়া যাবে না। সে সময়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন পীযূষ গয়াল।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘নিজেও খাব না, অন্যকে খেতে দেব না বলা প্রধানমন্ত্রীর উচিত মুখ খুলে ব্যাখ্যা দেওয়া যে কেন তাঁর দলের সভাপতির ছেলেকে এ ভাবে বাড়তি আর্থিক সুবিধে পাইয়ে দেওয়া হল?’’