আধার কার্ডের গুরুত্বের উপর তাঁর অগাধ ভরসা টেলিফম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার প্রধান আর এস শর্মার। আর সেই ভরসা ও বিশ্বাসের উপর আস্থা রেখেই আর এস শর্মা মনে মনে একখানা বড়সড় চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ।
টেলিফম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার প্রধান আর এস শর্মার বিশ্বাস আধার কার্ডের নম্বর জানলেও কেউ কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। নিজের এই ধারণা ও বিশ্বাসকেই তিনি জনস্বার্থে ছড়িয়ে দিতে মরিয়া। তাই টুইটারে নিজের আধার নম্বর দিয়ে লিখলেন, ”দেখি এই নম্বরটা পেয়ে কে আমার কেমন ক্ষতি করতে পারে! এটা চ্যালেঞ্জ।”
গত এক বছরে আধার কার্ডে প্রদত্ত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন উঠেছে। আধার কার্ডে দেওয়া ব্যাক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারবার। যদিও সরকার পক্ষের কেউই কখনও এই অভিযোগ সর্বোতভাবে মেনে নেননি। তাদের বরাবরের যুক্তি, আধার কার্ডের তথ্য ফাঁস হলে কারও কোনও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু এস শর্মা চ্যালেঞ্জ করে যা ফেরত পেলেন তাতে আপনিও চমকে উঠতে পারেন। টুইটারে নিজের আধার কার্ড নম্বর দিয়ে চ্যালেঞ্জ করার পর নিজের ফোন ও আধার নম্বর ফেরত পেলেন তিনি। অনেকে আবার তাঁকে সতর্ক করলেন, এমন কাজ যেন তিনি ভবিষ্যতে না করেন। উড়ে এল নানান ব্যঙ্গও।
কেউ আবার চ্যালেঞ্জার আর এস শর্মাকেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বললেন, লিখিত আকারে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার নিশ্চয়তা দিলে ওই আধার নম্বর মারফত তাঁর ব্যক্তিগত অনেক তথ্য সামনে তুলে ধরা যেতে পারে। বেশ কয়েক জনার হ্যাকার আবার তার পরোয়া না করেই ট্রাই প্রধানের পাঁচটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং সেগুলির আইএফএসি কোড পর্যন্ত ফাঁস করে দিয়েছেন। প্রমাণ হিসাবে তাঁর অ্যাকাউন্টে এক টাকা জমাও দিয়েছেন।
মোবাইল নম্বর, প্যান কার্ড নম্বর, বাড়ির ঠিকানা, জন্ম তারিখ, ব্যক্তিগত ছবিসহ অনেক কিছুই টুইটার ব্যবহারকারীদের থেকে ফেরত পেলেন ট্রাই প্রধান। তবে চাপের মুখে অবশ্য ভেঙে পড়লেন না আর এস শর্মা। উল্টে বললেন, ”ফোন নম্বর বা প্যান নম্বর কারও কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। যেটাতে ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু কেউ করতে পারে নাকি দেখি!”
গত শুক্রবারই বিচারক শ্রীকৃষ্ণ কমিটি আধার কার্ড সংশোধনী বিলের হয়ে সওয়াল করেছিল। বিলে বলা হয়, আধার কার্ডে দেওয়া তথ্য ফাঁস হওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। অনেকেই মনে করছেন, শ্রীকৃষ্ণ কমিটিকে ঘুরিয়ে বার্তা দিতেই আর এস শর্মার এই নাটকীয় সিদ্ধান্ত।