মোদীর শাসনকালে দেশজুড়ে বেড়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সংঘর্ষে মৃত্যুর সংখ্যাও উর্ধ্বমুখি। মেনে নিল কেন্দ্রীয় সরকার।
২০১৪ সালের বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে হিংসার পরিমাণ বেড়েছে। বেড়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনাও। বারেবারেই অভি্যোগ করেন বিরোধীরা। গেরুয়া বাহিনীর বড়, ছোট সব নেতার উস্কানিমূলক মন্তব্যই এই দাঙ্গার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। বিরোধীদের দাবি, বেশিরভাগ দাঙ্গাই হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে।
বিরোধীদের অভিযোগকে ফুৎকারে উড়িয়ে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নাকভির দাবি ছিল, ‘বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। দেশে হিংসা হচ্ছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে।’
এই দাবির প্রেক্ষিতেই চলতি অধিবেশনে রাজ্যসসভার নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রকের কাছে জানতে চান, গত তিন বছরে সত্যি কী দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিমাণ বেড়েছে? দাঙ্গায় কতজন নিহত হয়েছেন? এ বিষয়ে সরকারের কী অবস্থান? কী পদক্ষেপ করা হয়েছে?
নির্দল সাংসদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী লিখিত আকারে যা জানালেন, তা কার্যত বিরোধীদের অভিযোগকেই মান্যতা দেয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারি হিসাবে ২০১৫ সালে দেশে ৭১৫টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গর ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৯৭ জন। ২০১৬ সালের সংখ্যাটা নামমাত্র কম। কিন্তু ২০১৭ সালে তা আবারও বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে ২০১৭ সালে ৮২২টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গর ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১১১।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ গঙ্গারাম অহীরের এই উত্তর দায়সাড়া বলে দাবি সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘প্রশ্নের সম্পূর্ণ উত্তর মেলেনি। দেশের কোথায় দাঙ্গা হয়েছে, কোন দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা কত তার উল্লেখ নেই।’ তাঁর হুঁশিয়ারি,’ সরকারের থেকে সম্পূর্ণ উত্তর জানতে চেয়ে এই ইস্যু ফের সংসদে উথ্থাপন করা হবে।’
স্বরাষ্টমন্ত্রকের লিথিত উত্তরে উল্লেখ, আইনশৃঙ্খতা রাজ্যের এক্তিয়ারভূক্ত। তবে সব রাজ্যকেই প্রয়োজনের ভিত্তিতে সব ধরনের সাহায্য করে থাকে। কেন্দ্রের দায় সাড়া উত্তরে চিড়ে ভিজছে না। পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট মোদী জমানায় দেশে বেড়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও নিহতের সংখ্যা। লিখিত উত্তর বিরোধীদের অভিযোগকেই কার্যত মান্যতা দিল। এই পরিসংখ্যানই কেন্দ্রকে নিশানার হাতিয়ার হতে চলেছে বিরোধীদের কাছে।