আজকাল দিয়া স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ড থেকে কপি করতে গিয়ে খুব ভুল করছে৷ বিষয়টি টিচারের নজর এড়ায়নি৷ দিয়ার মা প্রথম দিকে বিষটাটা গুরুত্ব দেননি৷ ভেবেছিলেন দিয়া অন্যমনস্কতার জন্য ভুল করে৷ কিন্তু যখন এটা রোজকারের ঘটনা হয়ে দাঁড়াল, তখন দিয়ার মা তাকে নিয়ে চোখের ডাক্তারের কাছে গেল৷ চোখ পরীক্ষা করে ধরা পড়ল দিয়ার চোখের পাওয়ার মাইনাস সেভেন৷ ডাক্তার বললেন ‘মায়োপিয়া’, যা বর্তমানে অধিকাংশ শিশুরই সমস্যা৷
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী দৃষ্টিক্ষীণতার সমস্যা সিঙ্গাপুরে ৷ আঠারো বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে শতকরা আশি ভাগ শিশু এই সমস্যায় ভোগে৷ ৬ থেকে ৭২ মাসের বাচ্চাদের মধ্যে ১০ শতাংশ শিশুর মায়োপিয়া আছে৷ গবেষণায় দেখা গেছে যে যদি কোনো শিশুর মায়োপিয়া প্রাথমিক স্কুলে ধরা পড়ে, তাহলে সমস্যাটি পরে আরো বেড়ে যায়৷ যাকে ‘হাই মায়োপিয়া’ বলে৷ এটি হলে চোখের রেটিনার বিচ্যূতি হতে পারে৷
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যদি সূর্যরশ্মি সরাসরি আমাদের দেহে লাগে তাহলে আমাদের শরীরে ডোপামিন নামক এক কেমিক্যাল তৈরি হয় যা মায়োপিয়া রোধে সাহায্য করে৷
আমাদের বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ শিশুরই দিনের বেশিরভাগ সময়টা স্কুলেই কেটে যায়৷ আর বাকি সময়টা কাটে ঘরে বসে পড়াশুনা করে, টিভি, বা ফোন দেখে৷ খোলা আকাশের নীচে খেলার সুযোগ তারা খুব একটা পায় না৷ তাই সূর্যের আলো তাদের ত্বককে স্পর্শ করে না বললেই চলে৷
সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটির গবেষণা বলছে যেসব বাচ্চারা দিনে অন্তত ৪০ মিনিট করে তিন বছর ধরে লাগাতার আউটডোর অ্যাকটিভিটি করছে তাদের ২৩ শতাংশ মায়োপিয়া রোধ করা সম্ভব৷
তাই সিঙ্গাপুরে ৬ -১২ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে এখন একটি নতুন স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহৃত হচ্ছে যা মায়োপিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে৷ কিন্তু কীভাবে? ফিটসাইট নামক এই স্মার্ট ওয়াচটি দেখায় বাচ্চারা কতটা সময় খোলা অাকাশের নীচে সূর্যের অালোয় খেলেছে৷ স্মার্ট ওয়াচটি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার জন্য আছে সংশ্লিষ্ট একটি অ্যাপ৷
সফল হলে প্রচেষ্টাটি নিঃসন্দেহে বাচ্চাদের মায়োপিয়া রোধে এক নতুন পথের দিশা দেখাবে৷