২১শের মঞ্চ থেকে ১৯শে ভারত জয় সুর বেঁধে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক দিলেন ১৯শে বিজেপি ফিনিশের। দলীয় কর্মীদের জন্য দলনেত্রীর ১৯শের টার্গেট, ‘৪২শে ৪২।’
পরের বছর লোকসভা। বিজেপিকে হঠাতে আগেই বিরোধী শক্তিকে একজোট করে ফেডারাল ফ্রন্ট গঠনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন তৃণমূল সেই ফ্রন্টে কাঠ-বিড়ালির কাজ করবে। ভোটের আগে বিরোধীদের শক্তি প্রদর্শনের স্টেজ রিহার্সাল হবে ব্রিগেডে। এদিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৯শে জানুয়ারী ব্রিগেডে ‘বিজেপি ভারত ছাড়’র ডাক দিয়ে বিরোধী সব শক্তিকে এক করে একটি সভা হবে।“ সেই সভাতেই আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করবে ফেডারেল ফ্রন্ট। স্পষ্ট করে দেন ওই সভা থেকেই বিজেপির শেষ যাত্রার শুরু হবে। সভায় হাজির করা হবে বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতা, নেত্রীদের।
জাতীয় স্তরে একদিকে বিজেপিকে ভারত ছাড়ার ডাক, অন্যদিকে সেই পথ সুগম করতে ব্রিগেডে সভার আয়োজন। দলীয় নেতা, কর্মীদের মমতার নির্দেশ পুজোর পর থেকেই ব্রিগেডের সভার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হবে।
লোকসভাকে মাথায় রেখে ২১শের সভামঞ্চ থেকে এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন মমতা। ব্রিগেডে সভার আগে কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখাও শনিবার স্পষ্ট করে দেন তিনি। ঘোষণা করা হয় একগুচ্ছ কর্মসূচির।
বাংলায় এসে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার জবাব দিতে মেদিনীপুর কলেজ মাঠেই পাল্টা সভার সিদ্ধান্ত তৃণমূল সুপ্রিমোর। মোদীর সভায় শামিয়ানা ভেঙে পড়া নিয়েও এদিন কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্বাধীন ভারতে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে বিভেদের রাজনীতি করছে গেরুয়া শিবির। অভিযোগ বিরোধীদের। প্রতিবাদে, ১লা থেকে ১৫ই অগাস্ট, স্বাধীনতার মাসের প্রথম পনেরদিন বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে ‘দেশ বাঁচাও’ কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল।
তৃণমূল নেত্রীর জানান, লোকসভার অনাস্থায় জিতলেও ১৯শের ভোটে বিজেপি যে জয়ের স্বপ্ন দেখছে তা পূরণ হবে না। কোন অঙ্কে বিজেপি মসনদ খোয়াবে, তারও রোড ম্যাপ দেখান নেত্রী। তিনি বলেন, ’‘১৯শে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশায় বিরোধীরা একজোট হয়ে ভালো ফল করবে। মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাতে কমবে বিজেপির আসন। ফলে দেশব্যাপী ১০০ থেকে ১৫০টার মধ্যে আসন পেতে পারে বিজেপি।‘’ মমতার আশা সেই কৌশলে বাজি মাত করবে বিরোধী ঐক্য।
তবে কংগ্রেস ও বামেদের খোঁচা দিয়ে তৃণমূল নেত্রী জানান, “জাতীয় ও রাজ্যস্তরে দুই নীতি নিয়ে চলছে হাত ও কাস্তে। তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতেই এই নীতি।” বাম কংগ্রেসের সমালোচনা করে মমতা বলেন বাংলায় একাই লড়বে তৃণমূল।
সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রের নোটবন্দী, জিএসটি লাগুর সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বাংলার উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রত্যাশা মতোই বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখা স্পষ্ট করে ১৯শের ভোটের সুর বেঁধেছেন মমতা। ব্রিগেডে সভা করে একদিকে যেমন মমতা দেখাতে চাইবেন বিরোধী ঐক্যের শক্তি, তেমনই বোঝাবেন বিরোধী শক্তির স্টিয়ারিংও তাঁর হাতে।