মোদী নয়, দিদিতেই আস্থা প্রবীণ বিজেপি নেতা চন্দন মিত্রের , বিজেপির প্রাক্তণ সাংসদ চন্দন মিত্রের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে তৃণমূলে যোগ দেবেন চন্দন মিত্র।
সোমবারই বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ চন্দন মিত্র। যদিও নিজে স্বীকার করেননি সে কথা। দলের তরফেও স্পষ্ট করা হয়নি ইস্তফার বিষয়টি।
চন্দন মিত্রের পাশাপাশি বিজেপি ছাড়তে পারেন বসু পরিবারের সদস্য নেতাজি পরিবারের সদস্য তথা রাজ্য বিজেপি–র সহ–সভাপতি চন্দ্র বসুও। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওযার সম্ভাবনা ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে তাঁর। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তিনিই ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। সোমবার তিনি মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাননি। তবে তাঁর দাবি, রাজ্যে দলের কিছু কাজকর্ম ও গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে ক্ষুব্ধ তিনি। তবে এখনই দল ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি তিনি।
চন্দন ২০০৩ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রাজ্যসভায় ‘মনোনীত সাংসদ’ ছিলেন। ২০১০ সালের জুন মাসে বিজেপি তাঁকে মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভায় পাঠায়। ২০১৬ পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। প্রাক্তণ সাংসদ ও প্রবীণ সাংবাদিক চন্দন মিত্রের দল ছাড়ার বিষয়টিকে বিজেপির অন্দরের গোষ্ঠী রাজনীতির জের বলেই মনে করা হচ্ছে। গেরুয়া বাহিনীতে লালকৃষ্ণ আদবানির অনুগামী বলে পরিচিত চন্দন মিত্র। তবে ২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদি–অমিত শাহ দলের ক্ষমতায় আসতেই গুরুত্ব হারান প্রবীণ এই প্রাক্তণ সাংসদ।। সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে চন্দন দলের প্রকাশ্য সমালোচনাও করেন। মে মাসে উত্তরপ্রদেশের কৈরানা উপনির্বাচনে বিজেপি–র হারের পর তিনি সরাসরিই বলেছিলেন, ‘আখচাষিদের’ সমস্যার প্রতি ঠিকঠাক নজর দেয়নি দল। ওই হারকে ‘সিরিয়াস ধাক্কা’ বলে বর্ণনা করেন তিনি। চন্দনের ভবিষ্যতবাণী ‘২০১৯’ সালের লোকসভায় বিপক্ষ জোটবদ্ধ হলে বিজেপি সমস্যায় পড়বে।
ঘটনাচক্রে, সেই জোটবদ্ধ বিরোধীদের নেতৃত্বদানে প্রথম সারিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়। মমতার হাত ধরে সেই তৃণমূলেই আসতে চলেছেন দুই মেয়াদের রাজ্যসভার সাংসদ চন্দন মিত্র।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই এই প্রাক্তন সাংবাদিক–সম্পাদক এবং অধুনা বিজেপি নেতা নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখন থেকেই তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওযার সলতে পাকানো শুরু বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, সুবক্তা এবং রাজ্যসভার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চন্দনকে আবার মমতা রাজ্যসভায় পাঠাতে পারেন। আবার দলের অন্য একাংশের বক্তব্য, ২০১৯ সালে কলকাতার কাছাকাছি একটি লোকসভা আসনে তাঁকে টিকিট দেওয়া হতে পারে।
চন্দন মিত্রের মতো সুবক্তা ও বিজেপির প্রথম সারির নেতা মোদী নয়, আস্থা রাখছেন দিদিতেই। এই প্রেক্ষিতে চন্দন মিত্রকে দলে ঠাঁই দিয়ে গেরুয়া বাহিনীকে রাজ্যের শাসকদল একটা বার্তা দিতে পারবে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।