অনেক বাধা। তবুও অর্থনীতির উন্নয়নে দেশের মধ্যে প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গই। প্রায়শই এই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই দাবিকেই মান্যতা দিল রাজ্য সফররত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সদস্যরা। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক ও মানব সম্পদ বিকাশে রাজ্যের আগ্রগতির কথা স্বীকার করলেন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রধান এন কে সিং।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, চর্মশিল্প, নগর পরিকল্পনায় রাজ্যের কাজে খুশি পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়েই রাজ্যের কাজের প্রশংসা করে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিং বলেন, “আমরা চার-পাঁচটি বিষয়ে খতিয়ে দেখেছি, রাজ্যের উন্নতি ভালো হয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। সেই সঙ্গে আর্থিক সংস্কারে যেভাবে রাজ্য সরকার কাজ করছে, তা প্রশংসনীয়। রাজ্যে একাধিক ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার খুব ভালো। সামাজিক পরিষেবামূলক কাজেও রাজ্যে খুব ভালো করেছে।” অর্থ কমিশনের প্রশংসায় খুশি মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, “আমরা কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। খুবই অর্থবহ আলোচনা হয়েছে।”
বৈঠকে রাজ্যের প্রতি বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালের জনগণনাকে ‘টার্মস অফ রেফারেন্স’ হিসাবে ব্যবহার না করে ১৯৭১ সালের জনসংখ্যাই সূচক হিসাবে ব্যবহারের কথা বিবেচনার কথা কমিশনকে জানান মুখ্যমন্ত্রী। হয়েছে।
কমিশন ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ সালের জন্য রাজ্যকে আর্থিক বরাদ্দের সুপারিশ করবেন। কোন রাজ্যকে কত অর্থ বরাদ্দ করা উচিত, তার প্রস্তাব সম্বলিত রিপোর্ট রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেবে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। তাঁদের সামনেই কন্যাশ্রী, সবুজশ্রী, সবুজসাথী, শিক্ষাশ্রী, গতিধারা, স্বাস্থ্যসাথী, সমব্যাথী প্রকল্প তুলে ধরা হয়। এই সব প্রকল্পের মাধ্যমে কত মানুষ উপকৃত হচ্ছে, তাও ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, “এই ধরণের কাজে তিনি খুশি। তিনি বলেন, মানুষের কাছে সরাসরি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ ভালো। যেভাবে ই-পেমেন্ট বা ই-বিল চালু হয়েছে, তা খুবই প্রশংসার।”
এসজিডিপি নিয়ে রাজ্যের দেওয়া হিসেবের সঙ্গে সেন্ট্রাল স্যাম্পল সার্ভে অর্গানাইজেশন’র হিসেব মিলছে না। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগস্ট মাসের মধ্যে সিএসএসও’র সঙ্গে আলোচনা করে এসজিডিপি সংক্রান্ত হিসেব চূড়ান্ত করা হবে।’ এই একটি ক্ষেত্রে মতপার্থক্য ছাড়া এদিন অর্থ কমিশন দরাজ হাতে রাজ্যের কাজের প্রশংসা করে।
অর্থ কমিশনের মান্যতাতেই পরিষ্কার, বিপুল দেনার বোঝা মাথায় নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই রাজ্যের অর্থনীতির হাল ফিরছে।