নিজেদের কৃষকদরদি প্রমাণে মরিয়া বিজেপি। কুন্টাল প্রতি ধানের সহায়ক মূল্য দুশ টাকা করে বাড়িয়েছে কেন্দ্র। সেই কর্মসূচির কথা আগামী মঙ্গলবার মেদিনীপুরে দলীয় সভা থেকে ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার আগেই কৃষকদের আয় বাড়ানোর দাবিতে কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের আহ্বায়ক শিবরাজ সিংকে চিঠি দিয়ে মমতা বলেন যত দ্রুত সম্ভব কৃষকজের আয় বাড়ান।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, ৫৬ ইঞ্চির ক্যারিশমায় ভাটার টান। এবার ভোটে শুধু কথায় কাজের কাজ হবে না। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বিভিন্নভাবে কৃষক দরদি হওয়ার চেষ্টা মোদী-শাহ জুটির। এই পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগকে চিঠি লিখে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কৃষকদের আয় বাড়ানোর কথা বলে, প্রথমত মমতা বোঝাতে চেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নতুন কর্মসূচী নিলেও আসলে দেশে কৃষকদের অবস্থা শোচনীয়। দ্বিতীয়ত, বিজেপি কৃষক দরদি হলেও তিনিও পিছিয়ে নেই। চিঠিতে, কৃষকদের আয় বাড়ানোর বেশ কয়েকটি প্রস্তাবও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রস্তাবগুলি হল,
১, যত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব কৃষকদের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে কর্মসূচি নেওয়া। কেন্দ্রের উচিত কৃষকদের কল্যাণের ওপরেই জোর দেওয়া।
২, কৃষকদের জীবনের মানোন্নয়নে এনআরইজিএস–এ ১০০ দিনের কাজের বাইরেও আরও ১০০ দিন কাজ দেওয়া হোক।
৩, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কৃষিঋণ মকুব করা উচিত। এজন্য কেন্দ্রীয় বাজেট–বরাদ্দ করা প্রয়োজন।
৪, প্রতিটি রাজ্যে ধানের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করতে হবে। কৃষকেরা যাতে ন্যায্য মূল্য পান, সে–বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
৫, ভূমিহীন কৃষক, ভাগচাষি–সহ সব কৃষককেই কিসান ক্রেডিট কার্ডের আওতায় আনতে হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে ন্যূনতম দুলাখ টাকা ঋণ নিশ্চিত করতে হবে।
৬, কৃষি উৎপাদন রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭, কৃষিতে জল সংরক্ষণে জোর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য দপ্তরের বরাদ্দের সঙ্গে ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দকেও যুক্ত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
৮, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যাতে কাজ পান, তা নিশ্চিত করতে ১০০ দিনের কাজে সব দপ্তরকেই যুক্ত করতে হবে।
ইতিমধ্যেই কৃষক স্বার্থে রাজ্যে নানা পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল পরিচালিত সরকার। কিন্তু শুধু রাজ্যই নয়, সমগ্র দেশের কৃষক স্বার্থই তাঁর কাছে আগ্রাধিকার। সেই লক্ষ্যেই কেন্দ্রকে মমতার এই চিঠি।