বিপথগামী যুবক ও সমাজের অসহায় মহিলাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আর্থিকভাবে স্বয়ম্ভর করে তুলতে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ। অসহায় মহিলা ও বিপথগামী যুবকদের প্রশিক্ষণ দেবে রাজ্য।
ইতিমধ্যেই হাওড়া সিটি পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে ২৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও এই প্রকল্প শুরু হবে। পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগমের উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ওই যুবকরা ব্যবসা করার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে সহজেই ঋণ পাবেন। এই ঋণের উপরও স্বরোজগার নিগম ৩০ শতাংশ ভর্তুকি দেবে। ইতিমধ্যেই প্রতিটি জেলায় এই রকম যুবকদের তালিকা তৈরির জন্য নিগমের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনাদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁদের তালিকা অনুযায়ী বিপথে চলে যাওয়া যুবক ও অসহায় মহিলাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। গোটা রাজ্যে চালু হয়ে গেলে কয়েক হাজার যুবক এতে উপকৃত হবেন বলেই স্বরোজগার নিগমের কর্তারা মনে করছেন।
পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগমের চেয়ারম্যান পুলক রায় বলেন, “অনেক যুবক বিভিন্ন কারণে বিপথে চলে যান। তাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যবসায় যুক্ত করতে পারলে তাঁরা আর বিপথে যাবেন না। আবার অনেক মহিলা শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন। নিজেদের বাড়িতেও তাঁদের থাকা অসুবিধা হয়ে যায়। তাঁরা অসহায় হয়ে পড়েন। তাঁদেরও যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া যায়, তবে তাঁরা সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেন। সেই লক্ষ্যেই এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায়, চলতি বছরেই প্রতিটি জেলায় পুলিশের সহযোগিতায় এই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে। পুলকবাবু বলেন, “পুলিশের কাছেই সমাজে বিপথে যাওয়া যুবকদের খবর থাকে। আবার বধূ নির্যাতনের ঘটনাও পুলিসের জানা থাকে। সেই কারণেই পুলিসের কাছে আমরা সহযোগিতা চেয়েছি।”
স্বরোজগার নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সেলাই শেখানো, বুটিক, বিউটিশিয়ান কোর্স, ড্রাইভিং সহ মোট আট ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রাজ্যের একটি নামী বিউটিশিয়ান সংস্থা এই প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে। এছাড়াও কেউ ড্রাইভিং শিখে গাড়ি কিনতে চাইলে, গতিধারা প্রকল্পে তাঁকে গাড়ি কেনার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এর জন্য স্বরোজগার নিগমই পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেবে। এছাড়াও কম্পিউটার শিখে কেউ সাইবার কাফে করতে চাইলে, তাঁকেও ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। ঋণের ৬৫ শতাংশ দেবে ব্যাঙ্ক। নিগম ভর্তুকি হিসেবে ৩০ শতাংশ টাকা দেবে। যিনি ব্যবসা করবেন, তাঁকে মোট ঋণের পাঁচ শতাংশ টাকা দিতে হবে। সহজ কিস্তিতে এই ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য রাজ্য স্বরোজগার নিগমই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বহু মানবিক প্রকল্পের সাক্ষী রাজ্যবাসী। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন এই উদ্যোগ।