ধমকি আর হুমকি দিয়েই বঙ্গবিজয় করতে চায় বিজেপি। পুরুলিয়ার শিমুলিয়াতে জনসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর ব্যবহারিক ভাষা ছিল অনেকটাই হিন্দি সিনেমার ‘ডন‘-এর মতো।
হাবভাব এবং চালচলনে হুমকির সুর। যেন বাংলা এবং বাঙালির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতেই মঞ্চে উঠেছেন তিনি। বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের কথা তুললেন তিনি। কিন্তু কোন মুখে তুললেন, তা কে জানে! সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন জয় শ্রীরাম শ্লোগানে কলুষিত করে এসেছেন তাঁরই সাঙ্গো-পাঙ্গোরা। বাঙালি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চর্চা করতেই শান্তিনিকেতনে যায়, জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনতে নয়।
বাংলায় নাকি রবীন্দ্রসঙ্গীতের চেয়ে বোমার শব্দই বেশি শোনা যায়—এই কথাটি বলে বাংলা এবং বাঙালিকে অপমান করে গেলেন অমিত শাহ।
কী করতে চাইছে বিজেপি? কখনও দলের রাজ্য সভাপতি অশ্রাব্য ভাষায় এনকাউন্টার করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন, কান ধরে উঠবোস করাবেন কিংবা গায়ের চামড়া ছাড়িয়ে নেবেন বলছেন। কখনও আবার এক খুচরো নেতা ওপার বাংলা থেকে আসা বাঙালিকে দেশছাড়া করবেন বলছেন। কখনও আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমশাই ঘুষি পাকিয়ে জেলাশাসকের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। কিন্তু লোকজন বিশেষ সঙ্গে নেই।
এদিন অমিত শাহ অবশ্য তাঁর সহকর্মীদের এই বলে নিশ্চিত করেছেন যে, খুব দ্রুতই তিনি ভারত জ্বালাও পার্টির বাংলা জ্বালাও পোড়াও শাখাকে সক্রিয় এবং উজ্জীবিত করতে পারবেন। যাতে আগামী ২০১৯ সাল পর্যন্ত তাঁরা বাংলার বুকে জ্বালাও পোড়াও প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারেন। এই প্রক্রিয়া চালিয়েই বাংলা দখল করা যাবে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
এই প্রক্রিয়া চালতেই আগামী তিনমাস বাংলার বুকে ছ‘টি রথ চষে বেড়াবে বলে জানিয়ে গিয়েছেন অমিত শাহ। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়। লালকৃষ্ণ আদবানির রামরথ যাত্রার কথা ভুলে যায়নি বাঙালি। রথের পিছন পিছনে হানা দিয়েছিল দাঙ্গাবাজরা। রক্তস্রোতে ভেসে গিয়েছিল উত্তর ভারত। মৃতদেহের পাহাড় জমেছিল গ্রামেগঞ্জে। আবার রথ! আবার দাঙ্গার প্ররোচনা!
কিন্তু এবার আর অত সহজে হবেনা জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি। বাঙালির রাজনৈতিক মনন অত্যন্ত সক্রিয়। বেচাল দেখলেই গণপ্রতিরোধ হবে। তখন সামলাতে পারবেন তো গেরুয়া নেতারা?
(মতামত ব্যক্তিগত)