চোরাচালানকারীদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত মানবদেহ কঙ্কাল পড়ে থেকে নষ্ট হওয়ার চাইতে ডাক্তারি শিক্ষা ও গবেষণার কাজে সেগুলির সদ্ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে এবার উদ্যোগী হল শুল্ক দফতর।
প্রসঙ্গত ভারতে মানবদেহ কঙ্কাল ব্যবসা নিষিদ্ধ সেই ১৯৮৫ সাল থেকে। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে অবধি বিশ্বের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত মানবদেহ কঙ্কালের একটা বড় অংশের যোগান যেত এই ভারত থেকেই। নিযিদ্ধ হওয়ার পর এসব কাজে ধীরে ধীরে প্লাস্টিকের কঙ্কালের ব্যবহার বাড়ে। বেওয়ারিশ লাশের একটি বড় অংশ ব্যবহৃত হয় ডাক্তারি পরীক্ষানিরীক্ষা ও গবেষনার কাজে।
কিন্তু রফতানির বাজারে মানবদেহ কঙ্কালের চাহিদা অটুট থাকায় বেশ কিছু পাচারচক্র এখনো ভালোমতোই সক্রিয় এ দেশে, বিশেষ করে দেশের পূর্বদিকের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে। ভারত থেকে চড়া দামে এই মানবদেহ কঙ্কালগুলি চোরাচালান হয়ে যায় নেপাল, চীন, বাংলাদেশ, জাপান এবং আমেরিকা, ইউরোপ সহ পশ্চিম ও মধ্য প্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে।
গত বছরই বর্ধমান জেলা থেকে কঙ্কাল পাচার মামলায় জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় বেশ কিছু হাড়গোড়।
২০০১ থেকে ২০১৬- বিগত এই ষোল বছর ধরে সব মিলিয়ে প্রায় তেইশটি মামলায় কৃষ্ণনগরের কাতলামারি প্রিভেন্টিভ ইউনিট থেকে বেশ কিছু মানবদেহ কঙ্কাল বাজেয়াপ্ত করেছে শুল্ক দফতর। আর তাই ফেলে না রেখে এই মানবদেহ কঙ্কালগুলি গতকাল কলকাতার তিনটি নামকরা মেডিক্যাল কলেজের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শুল্ক দফতর।
কাস্টমস কমিশনার(প্রিভেন্টিভ ইউনিট) পার্থ রায় চৌধুরীর তত্বাবধানে কঙ্কালগুলি এদিন তুলে দেওয়া হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন এন্ড রিসার্চ এবং মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এনাটমি বিভাগের প্রধানদের হাতে।
কঙ্কালগুলি যাতে ডাক্তারি শিক্ষা ও গবেষণার কাজেই লাগে সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজগুলিকে।