ভারতের মানুষকে নানা রকম সুব্যবস্থার অঙ্গিকার করে ২০১৪ সালে দিল্লী দখল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু চার বছরে সেই লক্ষ্যে কতটা এগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুর্নীতি রুখতে মনমোহনের চেয়ে অনেক ধাপ পিছিয়ে মোদী, অন্তত এমনটাই মনে করছে ৭৫ শতাংশ ভারতীয়।
সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ নামে একটি অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার করা সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। সমীক্ষায় দাবি করা হচ্ছে যে তিন চতুর্থাংশ ভারতীয়ই মনে করছেন, মনমোহন জমানার তুলনায় মোদী জমানায় ২৭ শতাংশ বেশি হচ্ছে দুর্নীতি।মোট ১৩টি রাজ্যে এই সমীক্ষাটি করেছিল সিএমএস।
অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, পাঞ্চাব, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের। মোট দুহাজার পরিবারের মধ্যে করা হয় এই সমীক্ষা। মোট ১১টি বিভাগের দুর্নীতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এই সমীক্ষায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিদ্যুত্ সরবরাহ, স্কুল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল সরবরাহ, পুলিশ প্রশাসন এবং ১০০ দিনের কাজ। প্রায় ৭৫ শতাংশ পরিবারই জানিয়েছে এই বিভাগ গুলিতে দুর্নীতি আগের তুলনায় বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩৮ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে সরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রে দুর্নীতি আগের তুলনায় বেড়েছে অনেকটা। বেশিরভাগ পরিবারেরই দাবি, সরকারি পরিষেবা পেতে তাদের আগের তুলনায় অনেক বেশি ঘুষ দিতে হচ্ছে মোদী জমানায়। গত এক বছরেই এই ঘুষের পরিমাণ বেড়েছে ২৭ শতাংশ। যে ১১টি বিভাগে সমীক্ষা করা হয়েছিল, তাঁর মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ বিভাগ। শুধু তাই নয়, সিএমএসের করা সমীক্ষা অনুযায়ী দুর্নীতি রুখতে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকে। সংস্থাটি জানাচ্ছে, আগের তুলনায় মোদীর সদিচ্ছা নিয়ে সন্দিহান ব্যক্তির সংখ্যা গত একবছরে অনেকটা বেড়েছে। ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি রুখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
নোট বাতিল,ক্যাশলেস অর্থনীতি, জিএসটি, সরকারি পরিষেবার সঙ্গে আধার সংযোগ এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল দুর্নীতি রুখতেই। কিন্তু বাস্তবে তাঁর খুব একটা সুফল হতে দেখা যায়নি। তাছাড়া গত একবছরে নীরব মোদি, বিজয় মালিয়া, সুশীল মোদি, জয় শাহ, পীযূষ গোয়েলদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগও ধাক্কা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে। লোকপাল বিল চালু না হওয়াই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা নিয়েই।
মোদির ভাবমূর্তির যদি বদল না হয় তাহলে আসন্ন নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরকে বেশ সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।