হাওড়ায় ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পে ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ আসছে। প্রায় ৩ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। গতকাল ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের সিনার্জি উপলক্ষ্যে একথা জানালেন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র।
অমিত জানালেন, এর মধ্যে কিছুটা কার্যকর হয়েছে। বাকিগুলির প্রক্রিয়া চলছে। এই শিল্পের জন্য ব্যাঙ্কের যে সব প্রকল্প আছে, জোর দিলেন সেগুলি নিয়ে প্রতিটি জেলার শিল্প কেন্দ্রে কর্মশালার উপরে। আগামী বুধবার শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে নিয়ে ওই কর্মশালার আয়োজন করতে ব্যাঙ্ক ও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন অমিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি নবান্নে হাওড়ায় শিল্প নিয়ে একটা বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন বিনিয়োগকারীরা। তার পর এ দিনের আলোচনাসভায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং ৩ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা হয়েছে। এর মধ্যে এক লক্ষেরও বেশি লোককে প্রত্যক্ষ ভাবে নিয়োগ করা হবে। ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা শিল্পোদ্যোগীরাই বললেন। স্বপ্নে নয়, পাথর দেখিয়ে বলা এই পার্ক হয়েছে, এমনও নয়।’ অর্থমন্ত্রীর সংযোজন, ‘এটা সরকার বলছে না। তাঁরাই (শিল্পোদ্যোগীরা) তাঁদের বক্তব্য আপনাদের সামনে রাখলেন। হাওড়ায় প্রায় ২৭ হাজার ক্ষুদ্র শিল্প এবং ৩৭টি ক্লাস্টার রয়েছে। এই ইউনিট আরও বাড়াতে হবে। উন্নতমানের প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এদের।’
এ দিনের অনুষ্ঠানে জগদীশপুরে হোসিয়ারি পার্ক গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ১৪.৯৬ একর জমি প্রদান করা হয়। অর্থমন্ত্রী জানান, জগদীশপুরের ওই এলাকায় ১২০ একর জমিতে গড়ে উঠছে দেশের সর্ববৃহৎ হোসিয়ারি পার্ক। জোরকদমে চলছে কাজ। পরিকাঠামো গড়ার কাজও প্রায় শেষ। হোসিয়ারি পার্কের জন্য রাস্তা, বিদ্যুতের সাব-স্টেশন করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ১৭০টি ইউনিট থাকবে। ১ লক্ষ ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২০২১ সালেই কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে প্রথম হোসিয়ারি পার্ক তৈরি হল এখানে। যার ফলে বিশাল বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানও হবে। ৪-৫টি ইউনিট ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। দেশের মডেল হোসিয়ারি পার্ক হয়ে উঠবে এটি। যা বিশ্ব-প্রতীকেও (গ্লোবাল সিম্বল) পরিণত হবে। কিছু উদ্যোগী এখান থেকে চলে গিয়েছিলেন তামিলনাড়ুতে। পশ্চিমবঙ্গে আজ তাঁরা ফিরছেন।’ সাঁকরাইল ফাউন্ড্রি পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেখানেও বড় বিনিয়োগ আসছে এবং বড় কর্মসংস্থান হতে চলেছে। অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘ফাউন্ড্রি পার্কে ২,৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে। এখানেও ৩০ হাজার কর্মসংস্থান হবে। ১০০টি ইউনিট থাকবে। ইতিমধ্যে ৫টি ইউনিট এসে গিয়েছে। চলতি বছরেই পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে।’ ইএসআর নামে একটি কোম্পানি উলুবেড়িয়ায় লজিস্টিক হাব তৈরি করছে। সেখানে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজনের মতো সংস্থায় প্রত্যক্ষ ভাবে প্রায় ৬ হাজার এবং পরোক্ষে আরও হাজার চারেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলেও মন্ত্রীর দাবি।