ভারত সফরে থাকাকালীন দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি ফিরে যেতেই গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সরব হল আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। তাদের অভিযোগ, বেছে বেছে মুসলিমদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। অথচ সব দেখেশুনেও নীরব সরকার। নৃশংস এবং লাগামছাড়া হিংসা রুখে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তারা। তবে মার্কিন ওই সংগঠনের অভিযোগ খারিজ করে‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছে বিদেশ দফতর।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর চলাকালীনই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের সঙ্ঘর্ষে তেতে ওঠে রাজধানী দিল্লী। এলোপাথাড়ি ইট ও গুলিবৃষ্টিতে গত পাঁচ দিনে সেখানে মৃত্যুসংখ্যা ৩৪ ছাড়িয়েছে। বুধবার ইউএসসিআইআরএফ-এর ওয়েবসাইটে তা নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর শেষ হতেই প্রাণঘাতী দাঙ্গায় তেতে উঠেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লী। মুসলিমদের নিশানা করে উন্মত্ত জনতা হামলা চালাচ্ছে বলে জানতে পেরেছি আমরা। তাতে এখনও পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন। বেশ কিছু মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভাঙচুর হয়েছে বলেও জানতে পেরেছি আমরা। এমন পরিস্থিতিতে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বহু মুসলিম। গতবছর ডিসেম্বর থেকে দেশ জুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীনই এই অশান্তি দানা বেঁধেছে।’
ইউএসসিআইআরএফ-এর কমিশনার অনুরিমা ভার্গব বলেন, ‘দিল্লী জুড়ে যে নৃশংস এবং লাগামছাড়া হিংসা বেড়ে চলেছে, তা চলতে দেওয়া যায় না। সমস্ত নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত ভারত সরকারের। অথচ তার বদলে খবর আসছে, মুসলিমদের উপর হিংসাত্মক হামলা রুখতে কোনও ভূমিকাই নেয়নি দিল্লী পুলিশ। নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। যে মুহূর্তে ভারতে বেছে বেছে মুসলিমদের নিশানা করা হচ্ছে, তাঁদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে, ঠিক সেই সময় এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগের।’
ইউএসসিআইআরএফ-এর চেয়ারপার্সন টোনি পারকিন্স বলেন, ‘দিল্লীতে যে হিংসা চলছে, যে ভাবে মুসলিমদের উপর হামলা এবং তাঁদের বাড়ি, দোকান এবং ধর্মীয় স্থান জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর আসছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তা দেওয়াই দায়িত্বশীল সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। তাই মুসলিমদের এবং যাঁরা যাঁরা হামলার শিকার হয়েছেন তাঁদের সকলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ভারত সরকারকে পদক্ষেপ করতে আর্জি জানাচ্ছি আমরা।’