সিএএ–এনআরসি নিয়ে ঘরে–বাইরে চাপের মধ্যেই মুদ্রাস্ফীতির রিপোর্ট আরও বিপাকে ফেলেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে। প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে পাইকারি সামগ্রীর উপর মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭.৩৫ শতাংশ। যা গত সাড়ে পাঁচ বছরে সব চেয়ে বেশি। এনিয়ে মঙ্গলবারই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে মোদী সরকারকে। সকালেই হিন্দীতে টুইট করে উত্তরপ্রদেশ পূর্বে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা মোদীকে তুলোধনা করে লিখেছেন, ‘শাকসব্জি, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে গরিব মানুষরা কাজ হারাচ্ছে। বিজেপি সরকার শুধু গরিবদের পকেটই লুঠ করেনি, তাঁদের পেটেও লাথি মেরেছে।’ অবিলম্বে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন প্রিয়াঙ্কা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মালপত্র-পরিষেবা বা স্থায়ী পণ্যে অবশ্য গত নভেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৩.৭ শতাংশ হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যে গত নভেম্বরে যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ১০.০১ শতাংশ, সেখানে একমাসের মধ্যে তা বেড়ে ডিসেম্বরে হয়েছে ১৪.১২ শতাংশ। যা ২০১৮–র ডিসেম্বর থেকে ২.৬৫ শতাংশ বেশি। শাকসব্জিতে মুদ্রাস্ফীতি ৬০.৫ শতাংশ। স্বাস্থ্য পরিষেবায় ৫.৫ শতাংশের উপর আরও ৩.৮ শতাংশ বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় সাংসারিক সামগ্রী এবং পরিষেবায় মুদ্রাস্ফীতি ছিল ২.২ শতাংশ। সেখান থেকে আরও ১.৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
গত অক্টোবরে যেখানে পাইকারি সামগ্রীতে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৪.৬২ শতাংশ তা নভেম্বরে হয় ৫.৫৪ শতাংশ। ডিসেম্বরে সেটা ছুঁয়েছে ৭.৩৫ শতাংশ। পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছে বলেই মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
আর্থিক নীতি পুনর্বিচার করে ডিসেম্বরে সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেসময়ই মুদ্রাস্ফীতি ২–৬ শতাংশ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল আরবিআই। কিন্তু আরবিআই–এর আনুমানিক ঊর্ধ্বসীমা ছাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি পৌঁছল ৭.৩৫ শতাংশে। দুবছর আগেই মোদি বড়াই করে বলেছিলেন দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারকে ৮ শতাংশে নিয়ে যাবেন। তার বদলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি থমকে গিয়েছে। অর্থনীতিকদের আশা, ২০২১–র মার্চের মধ্যে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ৬.২ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু সেটাও বিশ্বের চাহিদা কতটা বাড়ছে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যয় কতটা হচ্ছে তার উপর নির্ভরশীল বলেই মনে করছেন তাঁরা।