হায়দ্রাবাদ কান্ডের দোষীদের এনকাউন্টারের দিনেই উন্নাও কান্ডেএ এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। ধর্ষণের পর নির্যাতিতাকে দেওয়া হয়েছিল একের পর এক হুমকি। পুলিশে খবর দিলে আবার ধর্ষণ করা হবে তাঁকে। এমনকি ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও করে দেওয়া হবে। ঠিক এমনভাবেই ধর্ষিতাকে ভয় দেখানো হয়েছে। এমনকি তাঁকে ‘যৌনদাসী’ অবধি করে রাখা হয়েছিল। আর এর মূলে রয়েছে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার। শুধু তাই নয়। রায়বেরেলির যে বাড়িতে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেই বাড়ি থেকে বাইরের দিকে কিছু তাকিয়ে অবধি দেখার অবকাশ তাঁকে দেওয়া হয়নি। লালগঞ্জে পুলিশের কাছে জমা দেওয়া এফআইআর-এ ঠিক এই মর্মেই গুরুতর অভিযোগ করেছেন উন্নাও কাণ্ডের নির্যাতিতা।
এফআইআর-এ এই কয়েকটি শব্দেই বেশকিছু বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। রায়বেরেলির ওই বাড়ি থেকে বাইরের দিকে তাকালেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হত। শুধু মারধরই নয়। চলত গণধর্ষণ। উন্নাওয়ের ধর্ষিতা আরও জানিয়েছেন যে, বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিনের পর দিন তাঁর সঙ্গে ধর্ষণ এবং অমানবিক নির্যাতন করে গিয়েছে শিবম। মোবাইলে সবই তুলে রেখেছিল শিবম, একথাও জানিয়েছেন সেই নির্যাতিতা। আর সেই ভিডিও ভাইরাল করার নামে দিনের পর দিন চলত আরও নির্মম অত্যাচার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলির আদালতে ধর্ষণ মামলার শুনানি ছিল। সাক্ষ্য দিতে আদালতেই যাচ্ছিলেন উন্নাওয়ের গণধর্ষিতা। সে সময় রাস্তায় তাঁর উপর অতর্কিতে হামলা হয়। যে পাঁচ জন এ দিন নির্যাতিতার গায়ে আগুন দেয়, মাস কয়েক আগে তাঁদেরই গণলালসার শিকার হয়েছিল উন্নাওয়ের এই যুবতী। সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পেয়েছিল অভিযুক্তরা।
ঘটনার দিন আগুনে পোড়ার জ্বলন উপেক্ষা করে ১ কিলোমিটার ছুটেছেন নির্যাতিতা। বাঁচার অদম্য প্রয়াসে প্রাণপণ চিত্কার করেছেন। যদি কারও সাহায্য পান। অনেকেরই কানে গিয়েছে সেই আকুল আর্তি। কিন্তু, ওই এক কিলোমিটার পথে, এমন একজনকেও পাননি, যে এসে তাঁর পাশে দাঁড়ায়। অগত্যা নিজেই ওই অবস্থায় ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। নিজের ফোন নয়, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের কারও একজনের ফোন চেয়ে নেন। যেই তথ্যে কেঁপে উঠেছে গোটা দেশের জনগণ। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও উঠেছে সাধারণ দেশবাসীর পক্ষ থেকে।