দীর্ঘদিন ধরে নানা টালবাহানা চলসর পর অবশেষে কর্তারপুর করিডোর নিয়ে চুক্তি হল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। বৃহস্পতিবার সীমান্তে জিরো পয়েন্টে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একটি চুক্তিতে সই করেন। শীঘ্রই ভারতের অন্তর্গত পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর থেকে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ডেরা বাবা নানক পর্যন্ত করিডোর খুলে দেওয়া হবে। ভারত থেকে শিখ ও অন্যান্য ধর্মের তীর্থযাত্রীরা ওই পথে যাতায়াত করতে পারবেন। তবে তাঁদের ভিসা লাগবে না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের খবর, পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছেন, ৯ নভেম্বর তাঁদের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ওই করিডোর উদ্বোধন করবেন। সেই একইদিনে ভারতে করিডোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওইদিনই সম্ভবত তীর্থযাত্রীদের একটি দল ওই করিডোর দিয়ে যাত্রা করবে। তার তিনদিন পরেই শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হবে।
ডেরা বাবা নানক পাকিস্তানের পাঞ্জাবের নারোওয়াল জেলায় অবস্থিত। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক জীবনের শেষ ১৮ বছর সেখানে কাটিয়েছিলেন। ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দফতরের সচিব সি এল দাস বলেন, ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত সব ধর্মের মানুষ এখন থেকে কর্তারপুর করিডোর ব্যবহার করতে পারবেন। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, লঙ্গরের ব্যবস্থা করা হবে। গুরুদ্বারা চত্বরে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। অন্যদিকে আমরা তীর্থযাত্রীদের সুবিধার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তুলছি। একটি হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে। যাত্রীদের জন্য টার্মিনাল বিল্ডিং নির্মাণও প্রায় শেষের পথে।
চার কিলোমিটার দীর্ঘ কর্তারপুর করিডোর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকবে। যে তীর্থযাত্রীরা সকালে রওনা হবেন, তাঁদের ফিরতে হবে সেদিনের মধ্যেই। সারা বছরই করিডোর খোলা থাকবে। যদি কোনও দিন বন্ধ থাকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে আগে। প্রতিদিন ভিসা ছাড়া অন্তত পাঁচ হাজার তীর্থযাত্রী ওই করিডোর দিয়ে যেতে পারবেন।
কর্তারপুর করিডোর ব্যবহারের জন্য পাকিস্তান প্রত্যেক তীর্থযাত্রীর থেকে ২০ ডলার করে সার্ভিস চার্জ নিতে চায়। এভাবে পাকিস্তান মাসে ২১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করবে। ভারত যদিও সার্ভিস চার্জ নেওয়ার বিরুদ্ধে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরাত কাউর বাদল বলেছেন, সার্ভিস ফি নিলে গরিব তীর্থযাত্রীরা ওই করিডোর ব্যবহার করতে পারবেন না। সেই বিষয়টিও ভেবে দেখা হবে শীঘ্রই।