লোকসভা ভোটে দেশ জুড়ে উঠেছিল গেরুয়া ঝড়। কিন্তু মাত্র ৫ মাসের মধ্যেই বদলে গেল সেই চিত্র। আজ মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা বিধানসভা ভোটের গণনার পরে আর উঠল না মোদী ঝড়। মহারাষ্ট্রে বিজেপি–শিবসেনা জোট পুনরায় ক্ষমতায় ফিরলেও নিজেদের ১৬টি আসন বাড়িয়ে সেই জোটকে জোরাল ধাক্কা দিয়েছে কংগ্রেস–এনসিপি জোট।এই ধাক্কাই বলে দিচ্ছে মানুষের আস্থা হারাচ্ছে বিজেপি শিবির। মানুষ আর গেরুয়া জুমলায় ভুলছেন না।
হরিয়ানাতেও অপ্রত্যাশিতভাবে বিজেপিকে জোর টক্কর দিচ্ছে কংগ্রেস। হরিয়নায় খাট্টার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। এমনকী, মন্ত্রিসভার ৭ সদস্যও পরাজয়ের পথে। এই পরিস্থিতিতে নজর ছিল বিভিন্ন রাজ্যের উপনির্বাচনে। সেখানেও জোর টক্কর দিচ্ছে বিরোধীরা। বেশ কয়েকটি রাজ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে আসন বাড়িয়েছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস–এনসিপি জোটের আসন বাড়ার ছবি স্পষ্ট হতে শুরু করতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার বললেন, ‘মানুষ দম্ভের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। ক্ষমতা আসে, ক্ষমতা যায়। কিন্তু কোনও একটা কারণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকাটা জরুরি। আমাদের কর্মীরা সবাই দারুন কাজ করেছেন। কংগ্রেস–এনসিপি এবং জোটের অন্য শরিকরা সবাই তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জোটের সবাই মিলে বৈঠক করে ঠিক করবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। কথা বলব আমাদের সমর্থকদের সঙ্গেও। আমরা কখনওই শিবসেনার সঙ্গে যাব না। আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, যাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাঁদের কেউ সমর্থন করেনি। দলত্যাগীদের মানুষ মেনে নেননি।’ ভোটে ভালো ফলের জন্য আমজনতা ধন্যবাদজ্ঞাপনও করেছেন পাওয়ার।
খোদ মোদির রাজ্য গুজরাটের ৬টি আসনে উপনির্বাচনের মধ্যে ৪টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস।উপনির্বাচনের আগে এই ৬ আসনের মধ্যে ৪টি আসনই ছিল গেরুয়া শিবিরের দখলে। অর্থাৎ কংগ্রেস ২টি অতিরিক্ত আসন পাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের ১১টি আসনের ১১টিতেই জয়ের লক্ষ্যমাত্র রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু, এই মুহূর্তে বিরোধীরা এগিয়ে আছে ৫টি আসনে। সমাজবাদী পার্টি ২টি, বহুজন সমাজ পার্টি ২টি এবং কংগ্রেস একটি আসনে এগিয়ে আছে।
মধ্যপ্রদেশে ১টি আসনে উপনির্বাচন ছিল। তা ধরে রেখেছে কংগ্রেস। এই আসনে পরাজিত হলে কংগ্রেসের সরকার টিকে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারত। কিন্তু, তা কংগ্রেস ধরে রাখল। রাজস্থানের একটি আসনেও বড় ব্যবধানে জিতেছে হাত শিবির। ছত্তিশগড়ের এক আসনেও জয় কংগ্রেসের। পাঞ্চাবের ৪ আসনের উপনির্বাচনের মধ্যে কংগ্রেসের দখলে গিয়েছে ৩টি। আকালি দলের দখলে গিয়েছে একটি। বিহারেও খারাপ ফল বিজেপি জোটের। মোট পাঁচ আসনের উপনির্বাচনে তিনটি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস-আরজেডি জোট। একটি আসনে জয়ী আসাদুদ্দিন ওয়েসির এআইএমআইএম। অপর আসনটি নির্দলের দখলে। কেরলের পাঁচ আসনে শূন্য বিজেপি। দুটি আসন যাচ্ছে সিপিএমের দখলে। ৩টি আসনে কংগ্রেস জোটের দখলে। পুদুচেরির একটি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে একথা বলাই যায় পায়ের তলার মাটি সরছে বিজেপির।