সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন ও শ্যাম বেনেগালের মতো বিদ্বজনেরা দেশে ‘ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও গণপিটুনির’ নিন্দা করে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তার জেরে সেই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। এ বার সেই মামলার বিরোধিতা করে ফের চিঠি লিখলেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শা থেকে ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার – ১৮০ জন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিখ্যাত মানুষ স্বাক্ষর করে লিখলেন, ‘আমাদের চুপ করানো যাবে না’।
ওই চিঠিতে নাসিরউদ্দিন-সহ বাকিরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে লেখা খোলা চিঠি কী করে রাষ্ট্রেদ্রোহ হতে পারে’? তাঁদের বক্তব্য, ‘মানুষের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। এটা বিরুদ্ধ স্বর দমন করার নিপুণ ষড়যন্ত্র’। আরও বলা হয়েছে, ‘দেশে বেড়ে চলা গণপিটুনির ঘটনার উদ্বেগ প্রকাশ করে নাগরিক সমাজের দায়িত্ব পালন করার জন্য সাংস্কৃতিক জগতে আমাদের ৪৯ সহকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।’ নয়া চিঠিতে যাঁরা সই করেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লেখক অশোক বাজপেয়ী, জেরি পিন্টো, শিক্ষাবিদ ইরা ভাস্কর, কবি জিত্ থাইল, লেখক শামসুল ইসলাম, সঙ্গীতকার টিএম কৃষ্ণা। তাঁরা স্পষ্টই বলেছেন, আইনের অপব্যবহার করে তাঁদের সহকর্মীদের হেনস্থা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বুদ্ধিজীবেদের চিঠি নিয়ে বিহারের মুজফফরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সূর্যকান্ত তিওয়ারির কাছে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন সুধীর কুমার ওঝা নামের এক আইনজীবী। সেই পিটিশনকে ঘিরে একটি অর্ডার পাস করেন ম্যাজিস্ট্রেট। ওই অর্ডারের ভিত্তিতেই সদর পুলিশ স্টেশনে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন সুধীরবাবু। নিজের অভিযোগে সুধীরবাবু বলেছেন, ‘এই চিঠি লিখে তাঁরা দেশের মান ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরিশ্রমকে ছোট করতে চেয়েছেন। তাঁরা দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমি এফআইআর করেছি’।