বাংলার গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করতে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উন্নয়নের পাশাপাশি, এবার রাজ্যের কৃষকদের আট হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে সমবায় দফতর। মঙ্গলবার বর্ধমানের নবাবহাটে ‘দি বর্ধমান সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডে’র ৪০তম শাখার উদ্বোধনে এসে এ কথা জানালেন রাজ্যের সমবায় দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায়। অন্যদিকে, মন্ত্রী জানিয়েছেন, এবার সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী যাতে সমান গুরুত্ব পায়, তার জন্য বিভিন্ন দফতরের অধীনে থাকা রাজ্যের সব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে এক জায়গায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার জন্য তৈরি করা হচ্ছে সরকারি পোর্টাল।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “গতবার আমাদের অধীনে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। এবার তার চেয়ে আরও টাকা বাড়ানো হবে। গ্রামীণ মহিলারা যাতে নিজের বাড়ির উঠোনেই ছাগল, গোরু, মুরগি পালন করতে পারেন, তার জন্য আমরা ১৮০ কোটি টাকা দিচ্ছি। এক লক্ষ মহিলা সদস্যকে টাকা দেওয়া হবে। তার কাজও চলছে। আমরা এবার কৃষকদের আট হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছি”।
মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, গ্রামীণ এলাকার মহিলারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচুন। তাই তিনি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উপর জোর দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ২০১৭ সালে সমবায় সমিতি নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তিনি গ্রামীণ এলাকায় ব্যাঙ্ক পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর গোটা রাজ্যে ২৬৩১টি ‘কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট‘ খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ব্যাঙ্কের মতো সমস্ত পরিষেবা মিলছে। রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই খোলা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার মানুষ যাতে ব্যাঙ্ক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, তার জন্য অনেক নতুন ব্যাঙ্কও তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রীর ভাষণের পরই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক মহিলা সদস্য মঞ্চে উঠে মন্ত্রীকে বলেন, কিছু কিছু স্বনির্ভর গোষ্ঠী বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। কিছু গোষ্ঠী পাচ্ছে না। এটা যেন দেখা হয়। তারপরই মন্ত্রী এবং রাজ্যের সমবায় নিবন্ধক পি মোহন গান্ধী বলেন, সমবায় দফতরের অধীনে রাজ্যে দু’লক্ষ ২০ হাজার গোষ্ঠী রয়েছে। কিন্তু, শুধু সমবায় দফতর নয়, অন্য অনেক দফতরের অধীনে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। যেমন, আদিবাসীদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে, মৎস্যদফতরের স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে, বনদফরের স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এইরকম অনেক গোষ্ঠী রয়েছে”।