প্রাক্তন ছাত্রের বীরত্বে, কৃতিত্বে, গর্বে উদ্বেল বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ন্যাল শাখা। এই অভিনন্দন যে সেই অভিনন্দন, তা আমেরিকা প্রবাসী ছেলে এম এস আনন্দ শেখরের থেকে জেনেছেন স্কুলের শিক্ষিকা দুর্গা শিবকুমার।
২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে আটক হওয়ার পর অভিনন্দনের ছবি দেখে, তাঁর জুনিয়রকে মনে পড়ে যায় আনন্দের। তৎক্ষণাৎ মাকে ফোন করে সবটা জানান। প্রথমে চিনতে পারেননি শিক্ষিকা। তারপর অভিনন্দনের স্ত্রী তন্বীর পরিচয়ে চেনেন। কেভি ন্যাল–এ ছোট থেকেই পড়েছেন তন্বী। ‘সঙ্গে সঙ্গে দুজনের কথাই মনে পড়ে যায়। আমি অভিনন্দনকে পড়াইনি। তবে ওকে চিনতাম। গোলগাল, হাসিখুশি ছেলে। খেলাধুলোয় খুব উৎসাহী ছিল’ জানালেন উচ্ছ্বসিত শিক্ষিকা দুর্গা শিবকুমার৷
বিশেষ অভিনন্দন প্রাপ্য বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের। এখানেই নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা অর্জন করেছিলেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। এই স্কুলেই একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর পর সিবিএসই পাশ করে বায়ুসেনার জীবনের প্রস্তুতি নেন আদতে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা অভিনন্দন। আবার এই স্কুলেই এক ক্লাসে পড়ার সুবাদে ভাবী স্ত্রী, বায়ুসেনার প্রাক্তন স্কোয়াড্রন লিডার তন্বী মাড়োয়ার সঙ্গে আলাপ। তার আগে অভিনন্দন পড়তেন কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ডিআরডিও শাখায়।
সাহসী, পরাক্রমী অভিনন্দন তাঁদেরই অভিনন্দন জেনে স্কুলে পুরনো রেকর্ড ঘাঁটার হিড়িক লেগে যায়। একটু খুঁজতেই ‘ছাত্র’ অভিনন্দনের অজস্র ছবি বেরিয়ে পড়ে। গতকাল শুক্রবার অভিনন্দন যাতে ভালয় ভালয় দেশে ফেরেন, ঘরে ফেরেন, তার জন্য বিশেষ প্রার্থনাসভায় আয়োজন করেছিলেন কেভি ন্যাল কর্তৃপক্ষ।
বেঙ্গালুরুর এই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ৫টি হাউস ছিল। একাদশ শ্রেণীর নতুন ছাত্র খেলাধুলায় পারদর্শী, নেতৃত্ব দিতে বিশেষ সক্ষম অভিনন্দনকে একটি হাউসের ক্যাপ্টেন করা হয়। স্কুলের প্রিন্সিপাল মনোহরণ পিল্লাইও অভিনন্দনের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার কথা মনে রেখেছেন। শত্রু দেশের হাতে আটক হয়েও অবিচল, দেশের প্রতি কর্তব্যে অটল ছাত্রটির গর্বে আজ তিনি গর্বিত। জানিয়েছেন, ‘যে স্কুলের দায়িত্বে আছি, সেখানকার এক ছাত্র এমন বীর বায়ুসেনা আধিকারিক হয়েছে, জেনে আবেগে চোখের জল আর থামছিল না।’