আবারও আন্দোলন, বিক্ষোভ এবং আবারও স্থান সেই যাদবপুর। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে যদি বলা হয়, যাদবপুরে শিক্ষার থেকে আন্দোলনে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয় তা মোটেও অতিরঞ্জিত হবে না। বুধবার যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । অভিযোগ, ছাত্রদের ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন উপাচার্য। তাঁকে দেখতে গিয়ে যাদবপুরের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে পার্থ জানালেন, যাদবপুরে ছাত্র আন্দোলন তো বাৎসরিক অনুষ্ঠানের মতো হয়ে গেছে।
বুধবার অসুস্থ সুরঞ্জনবাবুকে দেখার পর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ চেয়েছি। কারা করেছে তা চিহ্নিত করা হবে। বারবার এটা চলতে পারে না। চিহ্নিত করার কাজ চলছে। যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’ উপাচার্য একজন শিক্ষক হিসেবে কারও নামে অভিযোগ করতে চাননি। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘উপাচার্য নিজের কথা বলেছেন। কিন্তু শিক্ষকতা ও প্রশাসন চালানো দুটো আলাদা বিষয়। প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
উপাচার্যকে দেখে বাইরে বেরিয়ে এসে শিক্ষামন্ত্রী এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘যাদবপুর কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নয়। যে গোটা রাজ্যে এক নিয়ম, আর যাদবপুরে অন্য নিয়ম চলবে। আমি ভাবতেই পারছি না। ছাত্ররা উপাচার্যকে ধাক্কা মারবে। অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলবে। মহিলা রেজিস্ট্রারকে নামতে দেবে না। সহ উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখবে!’
মঙ্গলবার কর্মসমিতির (ইসি) বৈঠকের পর বেরোনোর সময় ছাত্র–বিক্ষোভের মুখে পড়েন সুরঞ্জনবাবু। শারীরিকভাবে নিগৃহীত হন তিনি। তাঁর গায়ে হাত পর্যন্ত দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে প্রবেশিকা পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পড়ুয়া আন্দোলনের সময় ঘেরাও হয়েছিলেন সুরঞ্জনবাবু। সেবারও পড়ুয়াদের হাতে নিগৃহীত হন তিনি। সেই সময় উপাচার্যের দায়িত্বও ছাড়তে চেয়েছিলেন। বারবার পড়ুয়াদের হাতে উপাচার্যের নিগ্রহ হওয়ার তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, ‘উনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। রক্তচাপ একটু কমেছে কিন্তু মানসিক বিপন্নতা কাটেনি। উনি ভাবতেই পারছেন না যে ছাত্ররা তাঁকে ধাক্কা মারতে পারে, অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলতে পারে। মানসিক দিক দিয়ে কবে সুস্থ হবেন উনি বলতে পারছেন না।’