পুজোর সময় চোখের মেক আপ কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারারাত ধরে প্যান্ডাল হপিং করতে গিয়ে মেকআপ বেস ঘামে মুছে যেতে পারে। তখন মোটেই ভালো লাগবেনা। আবার পুজোর সময় দেদার ফুচকা কিংবা চিকেন রোলে মুখ চলবে। লিপস্টিক উঠে যাবে। কতবার টাচ আপ করবেন? তাহলে বাকি রইল কি? চোখের মেকআপ। ভেবে দেখুন চোখ যদি সুন্দর থাকে তাহলে কিন্তু সাজের অন্য খামতি গুলো সহজেই ক্যামোফ্লেজ করা যায়। তাই পুজোর দিনগুলোতে চোখের মেকআপের ব্যাপারে বাড়তি গুরুত্ব দিন। তাহলেই দেখবেন শেষরাতেও যখন সেলফি তুলছেন তখনও আপনাকে একই রকম সুন্দর লাগছে।
তাই পুজোর সময় চোখের মেকআপ নিয়ে রইল কিছু টিপস।
পুজোর এখনও কয়েকটা দিন বাকি আছে। চোখের যত্ন নিন। পর্যাপ্ত সময় ঘুমোন। ঠিকমতো ঘুম না হলে আপনার চোখ ক্লান্ত দেখাবে। চোখের তলায় কালি পড়বে। তখন চোখের মেকআপ ঠিক খোলতাই হবেনা। চোখে ক্লান্ত ভাব কমাতে শসার স্লাইস চোখে রাখতে পারেন। অথবা ঠাণ্ডা গ্রিন টি দিয়ে চোখ ধুতে পারেন। গ্রিন টি ব্যাগ চোখের উপরে কিছুক্ষণ রেখে বিশ্রাম নিতে পারেন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে ভালো আই ক্রিম বা আমন্ড অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করুন। ভালো স্পা-তে গিয়ে আই ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন।
এতো গেল চোখের রূপটান। আরও একটা কথা মাথায় রাখুন। পুজোর দু-তিন দিন আগেই পার্লারে গিয়ে আই-ব্রাও শেপ করিয়ে নিন। শেপড আই-ব্রাও চোখকে একটা নিট এবং শার্প লুক দেয়। মাথায় রাখবেন সরু করে আই-ব্রাও শেপ এখন নেহাতই আউটডেটেড। ফুল অ্যান্ড ডিফাইনড আই-ব্রাও চোখের মেকআপকে সম্পূর্ণ করে। তাই আই-ব্রাও পেনসিল, বা আই-ব্রাও পাউডারের মতো প্রসাধনী যেন হাতের কাছে মজুত থাকে।
এবার আসি আসল কথায়। অর্থাৎ চোখের মেকআপ কীভাবে অনেকক্ষণ টিকে থাকবে। অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে। কাজল বা আইলাইনার যাতে স্মাজ না করে তার খেয়াল রাখতে হবে।
চোখের মেকআপের শুরুতেই চোখের পাতায় ভালো করে প্রাইমার লাগিয়ে নিতে পারেন। প্রাইমার চোখের পাতা তৈলাক্ত ভাব কমাতে সাহায্য করে। ফলে কাজল বা লাইনার স্মাজ হয়না। আইশ্যাডোর রঙও ফিকে হয়ে যায়না। অর্থাৎ লং-লাস্টিং আই মেকআপের মজবুত ভিত হল প্রাইমার।
প্রাইমার লাগানোর পরে অবশ্যই কনসিলার ব্যবহার করুন। কনসিলারকে ম্যাজিক ওয়ান্ডের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। চোখের নীচের কালো ভাব ইত্যাদি খামতিগুলোকে নিমেষে দূর করে দেবে এই প্রসাধনী।
আই মেকআপের তুরুপের তাসগুলোর মধ্যে একটা হল আইশ্যাডো। সঠিক শেডের আইশ্যাডোর ব্যবহার চোখের আসল সৌন্দর্যকে বের করে আনে। চোখ বড় দেখায়। দুটো আইশ্যাডোর শেড ব্লেন্ড করে চোখের মেকআপ করতে পারেন। উৎসবের মেজাজের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে একটা নাটকীয় লুক তৈরি হবে।
একটু গ্লিটারি আই মেকআপ হলে ক্ষতি নেই। পোশাকের সঙ্গে মানানসই শেড বাছতে ভুলবেননা। যদি আই শ্যাডোর রঙ নির্বাচনে দ্বিধা থাকে, তাহলে চোখ বুজে কপার, ব্রাউন, গোল্ডেন, সিলভার, ব্ল্যাক ইত্যাদি শেড ব্যবহার করাতে পারেন। আর ক্যারি করতে পারলে মন খুলে এক্সপেরিমেন্ট করুন শেড নিয়ে। সকালের দিকে প্যাস্টেল আইশ্যাডো দিয়ে আই মেকআপ করতে পারেন। ও হ্যাঁ আইশ্যাডো লাগানোর আগে চোখের পাতায় একটু কমপ্যাক্ট লাগিয়ে নিন। তাতে আইশ্যাডোর রঙ ভালো খুলবে।
আইশ্যাডোর পরেই আসে আইলাইনার। চোখের প্রসাধনীর ক্ষেত্রে আইলাইনার এমন একটা অস্ত্র যে অন্য কোনও প্রসাধনী না ব্যবহার করেও দিব্যি স্টাইল স্টেটমেন্ট করা যায়। চোখের পাতায় উইঙ্গড আইলাইনারের স্টাইল এখন চলছে। এই আই মেকআপ নিয়ে নানা ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা যায়। সবচেয়ে বড় কথা দিনে বা রাতে যখনই এই আই মেকআপটি করুন না কেন, সবসময়েই নজর কাড়বেন।
তাছাড়া স্মোকি আইজ তো এখন ফ্যাশনের লুকবুকে চিরাচরিত জায়গা করে নিয়েছে। ভালো আইলাইনার ব্রাশ হাতের কাছে রাখুন। চোখের পাতায় ইচ্ছেমতো আইলাইনারের সূক্ষ টান দিতে বা বোল্ড মোচড় দিতে সাহায়্য করে ভাল আইলাইনার ব্রাশ। একটা স্মাজারও যেন মজুত থাকে হাতের কাছে।
ন্যুড আইলাইনার এখন ফ্যাশনে ইন। নো-মেকআপ লুক তৈরি হবে অথচ চোখ হয়ে উঠবে উজ্জ্বল। তাই চোখের ওয়াটার লাইনে ন্যুড আইলাইনার পেনসিল পুজোর সকালের সাজে আপনার তুরুপের তাস হতেই পারে।
এবারে আসি মাস্কারার প্রসঙ্গে। মাস্কারা চোখের মেকআপে নিমেষে একটা ড্রামা তৈরি করে। তাই আই মেকআপ সম্পূর্ণ করতে এই প্রসাধনীটি মাস্ট। ন্যুড আইলাইনারের যোগ্য সঙ্গত হতে পারে চোখের পাতায় মাস্কারার কয়েকটি প্রলেপ। আবার ক্লিয়ার মাস্কারা আপনার চোখে একটা রহস্যময়ী লুক তৈরি করবে। কোনও মেকআপ প্রসাধনী না ব্যবহার করেও শুধু মাস্কারাও চোখের সৌন্দর্যকে একটা অন্যমাত্রা দেয়। তাই ইচ্ছেমতো এক্সপেরিমেন্ট করতে কোনও বাধা নেই।
সবশেষে ব্যবহার করুন মেকআপ সেটার স্প্রে। মেকআপ সেটার স্প্রে-র ব্যবহারের ফলে চোখের মেকআপ ভালো করে বসবে। এবং দীর্ঘক্ষণ একইরকম থাকতে সাহায্য করবে।
এখন খবরের পুজোর প্রস্তুতিতে পরের বিষয় এথনিক ও ইন্দো ওয়েস্টার্ন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট