গত শুক্রবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল এক সেমিনারের। সেমিনারের বিষয় ছিল ‘নাগরিকপঞ্জি, সাম্প্রদায়িকতা, জাতীয়তাবোধ’ একটি মনোসামাজিক বিশ্লেষণ। সেই সেমিনারেই কবি সুবোধ সরকার বলেন, একমাত্র মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ই পারেন বাঙালিকে রক্ষা করতে। শুক্রবারের এই সেমিনারে যোগ দিয়েছিলেন, কবি সুবোধ সরকার, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন সহ একাধিক শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী। উপস্থিত সকলেই আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সরব হন। সুবোধ সরকার বলেন, ‘এন আর সি একটি আন্তর্জাতিক আলোচোনা।
এন আর সি বাংলাকে মারার একটি সুপরিকল্পিত, রাজনৈতিক পরিকল্পনাও বটে। বাঙালিকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’ কার্যত এইভাবেই এন আর সি প্রসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ান সুবোধ সরকার। শুধুমাত্র আসামেই নাগরকিপঞ্জি করা হচ্ছে কেন? এই প্রশ্নও তোলেন তিনি। সুবোধবাবু জানান, নাগরিকপঞ্জি আসামে করা হয়েছে কেন? সেখানে নরম মাটি বলে। উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থানে তা করা হয়নি। আদতে আসামের আড়ালে বাংলাকেই টার্গেট করা হচ্ছে সুপরিকল্পিত ভাবে। এন আর সি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিল্পী শুভাপ্রসন্ন বলেন, ‘খুনের আসামি, দাঙ্গার আসামির কী অধিকার আছে বাঙালি জাতিকে, বাংলা ভাষাকে অপমান করার।’ বাংলা এবং বাংলাভাষী মানুষদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, শিল্প ও রুচিবোধও একই সাথে জায়গা করে নেয় তাঁর বক্তব্যে। শুভাপ্রসন্নবাবুর দাবি, ‘হাজার অবমাননা সত্ত্বেও বাংলা ভাষা, বাঙালি জাতি কখনও পিছিয়ে থাকেনি, ভবিষ্যতেও থাকবে না।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ডিসঅ্যাবিলিটি স্টাডিস’ বিভাগ আয়োজিত এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ, অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। সারা সেমিনার জুড়েই উপস্থিত সকল বক্তাদের গলায় একই সুর শোনা যায়, বাংলা কখনও সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দেয়নি, আর ভবিষ্যতেও দেবে না; সে যতই আসামের আড়ালে বাংলাকেই নিশানা করুক কেন্দ্র।